হাংরি জেনারেশন আন্দোলনকে বেশির ভাগ কবি-লেখক কেন ঈর্ষা করেন ?

Thursday, August 25, 2022

হাংরি জেনারেশন সাহিত্য ও শিল্প আন্দোলন কেন সফল : অভিজিত পাল


বাংলা সাহিত্যে ষাটের দশকের হাংরি জেনারেশনের ন্যায় আর কোনও আন্দোলন তার পূর্বে হয় নাই । হাজার বছরের বাংলা ভাষায় এই একটিমাত্র আন্দোলন যা কেবল সাহিত্যের নয় সম্পূর্ণ সমাজের ভিত্তিতে আঘাত ঘটাতে পেরেছিল, পরিবর্তন আনতে পেরেছিল। পরবর্তীকালে তরুণ সাহিত্যিক ও সম্পাদকদের সাহস যোগাতে পেরেছে । 

১ ) হাংরি জেনারেশন আন্দোলনের প্রথম ও প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো তাঁরা সাহিত্যকে পণ্য হিসাবে চিহ্ণিত করতে অস্বীকার করেছিলেন । কেবল তাই নয় ; তাঁরা এক পৃষ্ঠার লিফলেট প্রকাশ করতেন ও বিনামূল্যে আগ্রহীদের মাঝে বিতরণ করতেন । তাঁরাই প্রথম ফোলডার-কবিতা, পোস্ট-কার্ড কবিতা, ও পোস্টারে কবিতা ও কবিতার পংক্তির সূত্রপাত করেন । পোস্টার এঁকে দিতেন অনিল করঞ্জাই ও করুণানিধান মুখোপাধ্যায় । ফোলডারে স্কেচ আঁকতেন সুবিমল বসাক  । ত্রিদিব মিত্র তাঁর ‘উন্মার্গ’ পত্রিকার প্রচ্ছদ নিজে আঁকতেন। পরবর্তীকালে দুই বাংলাতে তাঁদের প্রভাব পরিলক্ষিত হয় ।

২ ) হাংরি জেনারেশন আন্দোলনের গুরুত্বপূর্ণ অবদান প্রতিষ্ঠানবিরোধিতা । তাঁদের আগমনের পূর্বে প্রতিষ্ঠানবিরোধিতা করার কথা সাহিত্যকরা চিন্তা করেন নাই । সুভাষ ঘোষ বলেছেন প্রতিষ্ঠানবিরোধিতার অর্থ সরকার বিরোধিতা নয়, সংবাদপত্র বিরোধিতা নয় ; হাংরি জেনারেশনের বিরোধ প্রচলিত সাহিত্যের মৌরসি পাট্টাকে উৎখাত করে নবতম মূল্যবোধ সঞ্চারিত করার । নবতম শৈলী, প্রতিদিনের বুলি, পথচারীর ভাষা, ছোটোলোকের কথার ধরণ, ডিকশন, উদ্দেশ্য, শব্দ ব্যবহার, চিন্তা ইত্যাদি । পশ্চিমবঙ্গে বামপন্হী সরকার সত্বেও বামপন্হী কবিরা মধ্যবিত্ত মূল্যবোধ থেকে নিষ্কৃতি পান নাই । শ্রমিকের কথ্য-ভাষা, বুলি, গালাগাল, ঝগড়ার অব্যয় তাঁরা নিজেদের রচনায় প্রয়োগ করেন নাই । তা প্রথম করেন হাংরি জেনারেশনের কবি ও লেখকগন ; উল্লেখ্য হলেন অবনী ধর, শৈলেশ্বর ঘোষ, সুবিমল বসাক, ত্রিদিব মিত্র প্রমুখ । সুবিমল বসাকের পূর্বে ‘বাঙাল ভাষায়’ কেউ কবিতা ও উপন্যাস লেখেন নাই। হাংরি জেনারেশনের পরবর্তী দশকগুলিতে লিটল ম্যাগাজিনের লেখক ও কবিদের রচনায় এই প্রভাব স্পষ্ট ।

৩ ) হাংরি জেনারেশন আন্দোলনের তৃতীয় অবদান কবিতা ও গল্প-উপন্যাসে ভাষাকে ল্যাবিরিনথাইন করে প্রয়োগ করা । এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ মলয় রায়চৌধুরীর কবিতা ও গল্প-উপন্যাস । মলয় রায়চৌধুরী সর্বপ্রথম পশ্চিমবাংলার সমাজে ডিসটোপিয়ার প্রসঙ্গ উথ্থাপন করেন । বামপন্হীগণ যখন ইউটোপিয়ার স্বপ্ন প্রচার করছিলেন সেই সময়ে মলয় রায়চৌধুরী চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেন ডিসটোপিয়ার দরবারি কাঠামো ।উল্লেখ্য তাঁর নভেলা ‘ঘোগ’, ‘জঙ্গলরোমিও’, গল্প ‘জিন্নতুলবিলদের রূপকথা’, ‘অরূপ তোমার এঁটোকাঁটা’ ইত্যাদি । তিনি বর্ধমানের সাঁইবাড়ির ঘটনা নিয়ে রবীন্দ্রনাথের ‘ক্ষুধিত পাষাণ’ অবলম্বনে লেখেন ‘আরেকবারে ক্ষুধিত পাষাণ’ । বাঙাল ভাষায় লিখিত সুবিমল বসাকের কবিতাগুলিও উল্লেখ্য । পরবর্তী দশকের লিটল ম্যাগাজিনের কবি ও লেখকদের রচনায় এই প্রভাব সুস্পষ্ট ।

৪ ) হাংরি জেনারেশন আন্দোলনের চতুর্থ অবদান হলো পত্রিকার নামকরণে বৈপ্লবিক পরিবর্তন । হাংরি জেনারেশনের পূর্বে পত্রিকাগুলির নামকরণ হতো ‘কবিতা’, ‘কৃত্তিবাস’, ‘উত্তরসূরী’, ‘শতভিষা’, ‘পূর্বাশা’ ইত্যাদি যা ছিল মধ্যবিত্ত মূল্যবোধের বহিঃপ্রকাশ । হাংরি জেনারেশন আন্দোলনকারীগণ পত্রিকার নামকরণ করলেন ‘জেব্রা’, ‘জিরাফ’, ‘ধৃতরাষ্ট্র’, ‘উন্মার্গ’, ‘প্রতিদ্বন্দী’ ইত্যাদি । পরবর্তীকালে তার বিপুল প্রভাব পড়েছে । পত্রিকার নামকরণে সম্পূর্ণ ভিন্নপথ আবিষ্কৃত হয়েছে ।

৫ ) হাংরি জেনারেশন আন্দোলনে সর্বপ্রথম সাবঅলটার্ন অথবা নিম্নবর্গের লেখকদের গুরুত্ব প্রদান করতে দেখা গিয়েছিল । ‘কবিতা’, ‘ধ্রুপদি’, ‘কৃত্তিবাস’, ‘উত্তরসূরী’ ইত্যাদি পত্রিকায় নিম্নবর্গের কবিদের রচনা পাওয়া যায় না । হাংরি জেনারেশন আন্দোলনের বুলেটিনগুলির সম্পাদক ছিলেন চাষি পরিবারের সন্তান হারাধন ধাড়া । সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়সহ তৎকালীন কবিরা তাঁর এমন সমালোচনা করেছিলেন যে তিনি এফিডেভিট করে ‘দেবী রায়’ নাম নিতে বাধ্য হন । এছাড়া আন্দোলনে ছিলেন নিম্নবর্গের চাষী পরিবারের শম্ভু রক্ষিত, তাঁতি পরিবারের সুবিমল বসাক,  জাহাজের খালাসি অবনী ধর, মালাকার পরিবারের নিত্য মালাকার ইত্যাদি । পরবর্তীকালে প্রচুর সাবঅলটার্ন কবি-লেখকগণকে বাংলা সাহিত্যের অঙ্গনে দেখা গেল। 

৬ ) হাংরি জেনারেশন আন্দোলনের ষষ্ঠ গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব হলো রচনায় যুক্তিবিপন্নতা, যুক্তির কেন্দ্রিকতা থেকে মুক্তি, যুক্তির বাইরে বেরোনোর প্রবণতা, আবেগের সমউপস্হিতি, কবিতার শুরু হওয়া ও শেষ হওয়াকে গুরুত্ব না দেয়া, ক্রমান্বয়হীনতা, যুক্তির দ্বৈরাজ্য, কেন্দ্রাভিগতা বহুরৈখিকতা ইত্যাদি । তাঁদের আন্দোলনের পূর্বে টেক্সটে দেখা গেছে যুক্তির প্রাধান্য, যুক্তির প্রশ্রয়, সিঁড়িভাঙা অঙ্কের মতন যুক্তি ধাপে-ধাপে এগোতো, কবিতায় থাকতো আদি-মধ্য-অন্ত, রচনা হতো একরৈখিক, কেন্দ্রাভিগ, স্বয়ংসম্পূর্ণতা । 

৭) হাংরি জেনারেশন আন্দোলনের পূর্বে লেখক-কবিগণ আশাবাদে আচ্ছন্ন ছিলেন মূলত কমিউনিস্ট প্রভাবে । ইউটোপিয়ার স্বপ্ন দেখতেন । বাস্তব জগতের সঙ্গে তাঁরা বিচ্ছিন্ন ছিলেন । হাংরি জেনারেশন আন্দোলনকারীগণ প্রথমবার হেটেরোটোপিয়ার কথা বললেন । হাংরি জেনারেশনের কবি অরুণেশ ঘোষ তাঁর কবিতাগুলোতে বামপন্হীদের মুখোশ খুলে দিয়েছেন। হাংরি জেনরেশনের পরের দশকের কবি ও লেখকগণের নিকট বামপন্হীদের দুইমুখো কর্মকাণ্ড ধরা পড়ে গিয়েছে, বিশেষ করে মরিচঝাঁপি কাণ্ডের পর ।

৮ ) হাংরি জেনারেশন আন্দোলনের পূর্বে কবি-লেখকগণ মানেকে সুনিশ্চিত করতে চাইতেন, পরিমেয়তা ও মিতকথনের কথা বলতেন, কবির নির্ধারিত মানে থাকত এবং স্কুল কলেজের ছাত্ররা তার বাইরে যেতে পারতেন না । হাংরি জেনারেশনের লেখকগণ অফুরন্ত অর্থময়তা নিয়ে এলেন, মানের ধারণার প্রসার ঘটালেন, পাঠকের ওপর দায়িত্ব দিলেন রচনার অর্থময়তা নির্ধারণ করার, প্রচলিত ধারণা অস্বীকার করলেন । শৈলেশ্বর ঘোষের কবিতার সঙ্গে অলোকরঞ্জন দাশগুপ্তের কবিতার তুলনা করলে বিষয়টি স্পষ্ট হবে ।

৯ ) হাংরি জেনারেশন আন্দোলনের পূর্বে ‘আমি’ থাকতো রচনার কেন্দ্রে, একক আমি থাকতো, লেখক-কবি ‘আমি’র নির্মাণ করতেন, তার পূর্বনির্ধারিত মানদণ্ড থাকতো, সীমার স্পষ্টিকরণ করতেন রচনাকার, আত্মপ্রসঙ্গ ছিল মূল প্রসঙ্গ, ‘আমি’র পেডিগ্রি পরিমাপ করতেন আলোচক। হাংরি জেনারেশন আন্দোলনকারীগণ নিয়ে এলেন একক আমির অনুপস্হিতি, আমির বন্ধুত্ব, মানদণ্ড ভেঙে ফেললেন তাঁরা, সীমা আবছা করে দিলেন, সংকরায়ন ঘটালেন, লিমিন্যালিটি নিয়ে এলেন ।

১০ ) হাংরি  জেনারেশন আন্দোলনের পূর্বে শিরোনাম দিয়ে বিষয়কেন্দ্র চিহ্ণিত করা হতো । বিষয় থাকতো রচনার কেন্দ্রে, একক মালিকানা ছিল, লেখক বা কবি ছিলেন টাইটেল হোলডার। হাংরি জেনারেশনের লেখক-কবিগণ শিরোনামকে বললেন রুবরিক ; শিরোনাম জরুরি নয়, রচনার বিষয়কেন্দ্র থাকে না, মালিকানা বিসর্জন দিলেন, ঘাসের মতো রাইজোম্যাটিক তাঁদের রচনা, বৃক্ষের মতন এককেন্দ্রী নয় । তাঁরা বললেন যে পাঠকই টাইটেল হোলডার।

১১ ) হাংরি জেনারেশনের পূর্বে কবিতা-গল্প-উপন্যাস রচিত হতো ঔপনিবেশিক মূল্যবোধ অনুযায়ী একরৈখিক রীতিতে । তাঁদের ছিল লিনিয়রিটি, দিশাগ্রস্ত লেখা, একক গলার জোর, কবিরা ধ্বনির মিল দিতেন, সময়কে মনে করতেন প্রগতি । এক রৈখিকতা এসেছিল ইহুদি ও খ্রিস্টান ধর্মগ্রন্হের কাহিনির অনুকরণে ; তাঁরা সময়কে মনে করতেন তা একটিমাত্র দিকে এগিয়ে চলেছে । আমাদের দেশে বহুকাল যাবত সেকারণে ইতিহাস রচিত হয়েছে কেবল দিল্লির সিংহাসন বদলের । সারা ভারত জুড়ে যে বিভিন্ন রাজ্য ছিল তাদের ইতিহাস অবহেলিত ছিল । বহুরৈখিকতারে প্রকৃষ্ট উদাহরণ হলো ‘মহাভারত’ । হাংরি জেনারেশনের কবি-লেখকগণ একরৈখিকতা বর্জন করে বহুরৈখিক রচনার সূত্রপাত ঘটালেন । যেমন সুবিমল বসাকের ‘ছাতামাথা’ উপন্যাস, মলয় রায়চৌধুরীর দীর্ঘ কবিতা ‘জখম’, সুভাষ ঘোষের গদ্যগ্রন্হ ‘আমার চাবি, ইত্যাদি । তাঁরা গ্রহণ করলেন প্লুরালিজম, বহুস্বরের আশ্রয়, দিকবিদিক গতিময়তা, হাংরি জেনারেশনের দেখাদেখি আটের দশক থেকে কবি ও লেখকরা বহুরৈখিক রচনা লিখতে আরম্ভ করলেন ।

১২ ) হাংরি জেনারেশনের পূর্বে মনে করা হতো কবি একজন বিশেষজ্ঞ । হাংরি জেনারেশনের কবিরা বললেন কবিত্ব হোমোসেপিয়েন্সের প্রজাতিগত বৈশিষ্ট্য । পরবর্তী প্রজন্মে বিশেষজ্ঞ কবিদের সময় সমাপ্ত করে দিয়েছেন নতুন কবির দল এবং নবনব লিটল ম্যাগাজিন ।

১৩ ) ঔপনিবেশিক প্রভাবে বহু কবি নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব দাবি করতেন । ইউরোপীয় লেখকরা যেমন নিজেদের ‘নেটিভদের’ তুলনায় শ্রেষ্ঠ মনে করতেন । হাংরি জেনারেশনের পূর্বে শ্রেষ্ঠ কবি, শ্রেষ্ঠ কবিতা, শ্রেষ্ঠত্ব, বিশেষ একজনকে তুলে ধরা, নায়ক-কবি, সরকারি কবির শ্রেষ্ঠত্ব, হিরো-কবি, এক সময়ে একজন বড়ো কবি, ব্র্যাণ্ড বিশিষ্ট কবি  আইকন কবি ইত্যাদির প্রচলন ছিল । হাংরি জেনারেশন সেই ধারণাকে ভেঙে ফেলতে পেরেছে তাদের উত্তরঔপনিবেশিক মূল্যবোধ প্রয়োগ করে । তারা বিবেচন প্রক্রিয়া থেকে কেন্দ্রিকতা সরিয়ে দিতে পেরেছে, কবির পরিবর্তে একাধিক লেখককের সংকলনকে গুরুত্ব দিতে পেরেছে, ব্যক্তি কবির পরিবর্তে পাঠকৃতিকে বিচার্য করে তুলতে পেরেছে। সবাইকে সঙ্গে নিয়ে চলার কথা বলেছে । সার্বিক চিন্তা-চেতনা ও কৌমের কথা বলেছে । তাঁদের পরবর্তী কবি-লেখকরা হাংরি জেনারেশনের এই মূল্যবোধ গ্রহণ করে নিয়েছেন ।

১৪ ) হাংরি জেনারেশনের পূর্বে শব্দার্থকে সীমাবদ্ধ রাখার প্রচলন ছিল । রচনা ছিল কবির ‘আমি’র প্রতিবেদন । হাংরি জেনারেশনের কবি-লেখকরা বলেছেন কথা চালিয়ে যাবার কথা। বলেছেন যে কথার শেষ নেই । নিয়েছেন শব্দার্থের ঝুঁকি । রচনাকে মুক্তি দিয়েছেন আত্মমনস্কতা থেকে । হাংরি জেনারেশনের এই কৌম মূল্যবোধ গ্রহণ করে নিয়েছেন পরবর্তীকালের কবি-লেখকরা । এই প্রভাব সামাজিক স্তরে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ।

১৫ ) হাংরি জেনারেশনের পূর্ব পর্যন্ত ছিল ‘বাদ’ দেবার প্রবণতা ; সম্পাদক বা বিশেষ গোষ্ঠী নির্ণয় নিতেন কাকে কাকে বাদ দেয়া হবে । হাংরি জেনারেশনের পূর্বে সাংস্কৃতিক হাতিয়ার ছিল “এলিমিনেশন”। বাদ দেবার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সংস্কৃতিকে তাঁরা নিজেদের আয়ত্বে রাখতেন । হাংরি জেনারেশনের সম্পাদকরা ও সংকলকরা জোট বাঁধার কথা বললেন । যোগসূত্র খোঁজাল কথা বললেন । শব্দজোট, বাক্যজোট, অর্থজোটের কথা বললেন । এমনকি উগ্র মতামতকেও পরিসর দিলেন । তাঁদের এই চারিত্র্যবৈশিষ্ট্য পরবর্তীকালের সম্পাদক ও সংকলকদের অবদানে স্পষ্ট । যেমন অলোক বিশ্বাস আটের দশকের সংকলনে ও আলোচনায় সবাইকে একত্রিত করেছেন । বাণিজ্যিক পত্রিকা ছাড়া সমস্ত লিটল ম্যাগাজিনের চরিত্রে এই গুণ উজ্বল ।

১৬ ) হাংরি জেনারেশনের পূর্ব পর্যন্ত একটিমাত্র মতাদর্শকে, ইজমকে, তন্ত্রকে, গুরুত্ব দেয়া হতো । কবি-লেখক গোষ্ঠীর ছিল ‘হাইকমাণ্ড’, ‘হেডকোয়ার্টার’, ‘পলিটব্যুরো’ ধরণের মৌরসি পাট্টা । হাংরি জেনারেশন একটি আন্দোলন হওয়া সত্বেও খুলে দিল বহু মতাদর্শের পরিসর, টুকরো করে ফেলতে পারলো যাবতীয় ‘ইজম’, বলল প্রতিনিয়ত রদবদলের কথা, ক্রমাগত পরিবর্তনের কথা । ভঙ্গুরতার কথা । তলা থেকে ওপরে উঠে আসার কথা । হাংরি জেনারেশনের পরে সম্পূর্ণ লিটল ম্যাগাজিন জগতে দেখা গেছে এই বৈশিষ্ট্য এবং এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক প্রভাব ।

১৭ ) হাংরি জেনারেশনের পূর্ব পর্যন্ত দেখা গেছে ‘নিটোল কবিতা’ বা স্বয়ংসম্পূর্ণ এলিটিস্ট কবিতা রচনার ধারা । তাঁরা বলতেন রচনাকারের শক্তিমত্তার পরিচয়ের কথা । গুরুগম্ভীর কবিতার কথা । নির্দিষ্ট ঔপনিবেশিক মডেলের কথা । যেমন সনেট, ওড, ব্যালাড ইত্যাদি । হাংরি জেনারেশনের কবি লেখকগণ নিয়ে এলেন এলো-মেলো কবিতা, বহুরঙা, বহুস্বর, অপরিমেয় নাগালের বাইরের কবিতা । তাঁদের পরের প্রজন্মের সাহিত্যিকদের মাঝে এর প্রভাব দেখা গেল । এখন কেউই আর ঔপনিবেশিক বাঁধনকে মান্যতা দেন না । উদাহরণ দিতে হলে বলতে হয় অলোক বিশ্বাস, দেবযানী বসু, ধীমান চক্রবর্তী, অনুপম মুখোপাধ্যায়, প্রণব পাল, কমল চক্রবর্তী প্রমুখের রচনা ।

১৮ ) হাংরি জেনারেশনের পূর্বে ছিল স্হিতাবস্হার কদর এবং পরিবর্তন ছিল শ্লথ । হাংরি জেনারেশনের কবি ও লেখকগণ পরিবর্তনের তল্লাশি আরম্ভ করলেন, প্রযুক্তির হস্তক্ষেপকে স্বীকৃতি দিলেন । পরবর্তী দশকগুলিতে এই ভাঙচুরের বৈশিষ্ট্য পরিলক্ষিত হয়, যেমন কমল চক্রবর্তী, সুবিমল মিশ্র, শাশ্বত সিকদার ও নবারুণ ভট্টাচার্যের ক্ষেত্রে ; তাঁরা ভাষা, চরিত্র, ডিকশন, সমাজকাঠামোকে হাংরি জেনারেশনের প্রভাবে গুরুত্ব দিতে পারলেন ।

১৯ ) হাংরি জেনারেশনের পূর্বে নাক-উঁচু সংস্কৃতির রমরমা ছিল, প্রান্তিককে অশোভন মনে করা হতো, শ্লীল ও অশ্লীলের ভেদাভেদ করা হতো, ব্যবধান গড়ে ভেদের শনাক্তকরণ করা হতো । হাংরি জেনারেশনের কবি ও লেখকরা সংস্কৃতিকে সবার জন্য অবারিত করে দিলেন । বিলোপ ঘটালেন সাংস্কৃতিক বিভাজনের । অভেদের সন্ধান করলেন । একলেকটিকতার গুরুত্বের কথা বললেন । বাস্তব-অতিবাস্তব-অধিবাস্তবের বিলোপ ঘটালেন । উল্লেখ্য যে বুদ্ধদেব বসু মলয় রায়চৌধুরীকে তাঁর দ্বারে দেখামাত্র দরোজা বন্ধ করে দিয়েছিলেন । পরবর্তীকালের লিটল ম্যাগাজিনে আমরা তাঁদের এই অবদানের প্রগাঢ় প্রভাব লক্ষ্য করি ।

২০ ) হাংরি জেনারেশনের পূর্বে ছিল ইউরোপ থেকে আনা বাইনারি বৈপরীত্য যা ব্রিটিশ খ্রিস্টানরা হা্রণ করেছিল তাদের ধর্মের ঈশ্বর-শয়তান বাইনারি বৈপরীত্য থেকে । ফলত, দেখা গেছে ‘বড় সমালোচক’ ফরমান জারি করছেন কাকে কবিতা বলা হবে এবং কাকে কবিতা বলা হবে না ; কাকে ‘ভালো’ রচনা বলে হবে এবং কাকে ভালো রচনা বলা হবে না ; কোন কবিতা বা গল্প-উপন্যাস  উতরে গেছে এবং কোনগুলো যায়নি ইত্যাদি । হাংরি জেনারেশনের কবি ও লেখকরা এই বাইনারি বৈপরীত্য ভেঙে ফেললেন । তাঁরা যেমন ইচ্ছা হয়ে ওঠা রচনার কথা বললেন ও লিখলেন, যেমন সুভাষ ঘোষের গদ্যগ্রন্হগুলি । হাংরি জেনারেশনের কবি ও লেখকগণ গুরুত্ব দিলেন বহুপ্রকার প্রবণতার ওপর, রচনাকারের বেপরোয়া হবার কথা বললেন, যেমন মলয় রায়চৌধুরী, পদীপ চৌধুরী ও শৈলেশ্বর ঘোষের কবিতা । যেমন মলয় রায়চৌধুরীর ‘প্রচণ্ড বৈদ্যুতিক ছুতার’ কবিতা ও ‘অরূপ তোমার এঁটোকাঁটা’ উপন্যাস । যেমন সুবিমল বসাকের বাঙাল ভাষার কবিতা যা এখন বাংলাদেশের ব্রাত্য রাইসুও অনুকরণ করছেন । হাংরি জেনারেশনের পরের দশকগুলিতে  তাঁদের এই অবদানের প্রভাব পরিলক্ষিত হয়, এবং তা সমগ্র পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের লিটল ম্যাগাজিনগুলিতে ।

২১ ) হাংরি জেনারেশনের পূর্বে ছিল আধিপত্যের প্রতিষ্ঠার সাহিত্যকর্ম । উপন্যাসগুলিতে একটিমাত্র নায়ক থাকত । হাংরি জেনারেশনের কবি ও লেখকগণ আধিপত্যের বিরোধিতা আরম্ভ করলেন তাঁদের রচনাগুলিতে । বামপন্হী সরকার থাকলেও তাঁরা ভীত হলেন না । হাংরি জেনারেশনের পূর্বে সেকারণে ছিল খণ্ডবাদ বা রিডাকশানিজমের গুরুত্ব । হাংরি জেনারেশনের কবি ও লেখকগণ গুরুত্ব দিলেন কমপ্লেকসিটিকে, জটিলতাকে, অনবচ্ছিন্নতার দিকে যাওয়াকে । যা আমরা পাই বাসুদেব দাশগুপ্ত, সুবিমল বসাক, মলয় রায়চৌধুরী, সুভাষ ঘোষ প্রমুখের গল্প-উপন্যাসে । পরবর্তী দশকগুলিতে দুই বাংলাতে এর প্রভাব পরিলক্ষিত হয় ।

২২ ) হাংরি জেনারেশনের পূর্বে গুরুত্ব দেয়া হয়েছিল গ্র্যাণ্ড ন্যারেটিভকে । হাংরি জেনারেশনের কবি লেখকগণ গুরুত্ব দিলেন মাইক্রো ন্যারেটিভকে, যেমন সুবিমল বসাকের ‘দুরুক্ষী গলি’ নামক উপন্যাসের স্বর্ণকার পরিবার, অথবা অবনী ধরের খালাসি জীবন অথবা তৎপরবতী কঠিন জীবনযাপনের ঘটনানির্ভর কাহিনি । পরবর্তী দশকগুলিতে দেখা যায় মাইক্রোন্যারেটিভের গুরুত্ব, যেমন গ্রুপ থিয়েটারগুলির নাটকগুলিতে ।

২৩ ) হাংরি জেনারেশনের কবি ও লেখকগণ নিয়ে এলেন যুক্তির ভাঙন বা লজিকাল ক্র্যাক, বিশেষত দেবী রায়ের প্রতিটি কবিতায় তার উপস্হিতি পরিলক্ষিত হয় । পরের দশকের লেখক ও কবিদের রচনায় লজিকাল ক্র্যাক অর্থাৎ যুক্তির ভাঙন অবশ্যম্ভাবী হয়ে উঠেছে । যেমন সাম্প্রতিক কালে অগ্নি রায়,  রত্নদীপা দে ঘোষ, বিদিশা সরকার, অপূর্ব সাহা, সীমা ঘোষ দে, সোনালী চক্রবর্তী, আসমা অধরা, সেলিম মণ্ডল, জ্যোতির্ময় মুখোপাধ্যায়, পাপিয়া জেরিন,  প্রমুখ ।

২৪ ) হাংরি জেনারেশন আন্দোলনের পূর্বে রচনায়, বিশেষত কবিতায়, শিরোনামের গুরুত্ব ছিল ; শিরোনামের দ্বারা কবিতার বিষয়কেন্দ্রকে চিহ্ণিত করার প্রথা ছিল । সাধারণত বিষয়টি পূর্বনির্ধারিত এবং সেই বিষয়ানুযায়ী কবি কবিতা লিখতেন । শিরোনামের সঙ্গে রচনাটির ভাবগত বা দার্শনিক সম্পর্ক থাকতো । ফলত তাঁরা মৌলিকতার হামবড়াই করতেন, প্রতিভার কথা বলতেন, মাস্টারপিসের কথা বলতেন ।হাংরি জেনারেশন আন্দোলনকারীগণ শিরোনামকে সেই গুরুত্ব থেকে সরিয়ে দিলেন । শিরোনাম আর টাইটেল হোলডার রইলো না । শিরোনাম হয়ে গেল ‘রুবরিক’ । তাঁরা বহু কবিতা শিরোনাম র্বজন করে সিরিজ লিখেছেন । পরবর্তী দশকের কবিরা হাংরি জেনারেশনের এই কাব্যদৃষ্টির সঙ্গে একমত হয়ে কবিতার শিরোনামকে গুরুত্বহীন করে দিলেন ; সম্পূর্ণ কাব্যগণ্হ প্রকাশ করলেন যার একটিতেও শিরোনাম নেই ।

২৫ ) হাংরি আন্দোলনকারীদের জীবনে নিষিদ্ধ পল্লী নামে কোনও এলাকা পৃথিবীর কোনও শহরে ছিল না ।


Posted by Abhijit Pal at 12:02 AM No comments:
Email ThisBlogThis!Share to XShare to FacebookShare to Pinterest

Saturday, September 11, 2021

সৌরভ দেবনাথের ঈর্ষা

 

Suvendu Debnath

8 সেপ্টেম্বর, 4:36 PM-এ  ·
ইদানিং বছর পাঁচেক বাংলা সাহিত্যের বাজারে নতুন এক ট্রেন্ড হয়েছে। আর তা হল কুৎসা করা। জীবিত এবং মৃত ব্যক্তিদের নিয়ে। আর এটা পাঠক লেখক দুপক্ষই করে থাকেন।খুব সহজ হচ্ছে মৃতদের ছাল ছাড়ানো, এ ক্ষেত্রে প্রতিরোধ আসার সম্ভবনা নেই। সমস্যা জীবিতদের ক্ষেত্রে। সে ক্ষেত্রে প্রতিরোধের সম্ভাবনা তো আছেই, পাশাপাশি বিরোধী পক্ষ প্রবল হলে উল্টে কুৎসাকারীর ছাল ছাড়ানো হয়ে যেতে পারে।
আমি বুঝি না (হয়ত আমার অক্ষমতা) যে ওমুকে লিখতে পারে না, তমুকে ধামাধরা, ও ওই বিখ্যাত কবির সঙ্গে শুয়ে লেখা ছাপিয়েছে বা তেল দিয়ে পুরস্কার পেয়েছে ইত্যাদি ইত্যাদি এসব কথা বলে কী লাভ হয়। হয় আমার ইচ্ছে ছিল কিন্তু আমি তেল দিতে পারিনি বা শুতে পারিনি, আর না হলে আমি এসবের প্রবল বিরোধী। আমার মোটা মাথায় যেটুকু ঢোকে তা হল আমি যদি এসব পছন্দ না করি, আমি নিজের লেখা বা পড়া নিয়ে থাকব, বাকিটা পাঠক বুঝে নেবে। লিখতে না জানলে পাঠক ছুঁড়ে ফেলবে, আর আমি যদি পাঠক হই, ভাল না লাগলে আমি পড়ব না। আর আমি যদি লেখক হই তাহলে নিজের লেখা নিয়ে ভাবব, নিজের লেখা লিখব, বাকিটা প্রকাশক আর পাঠকের হাতে ছেড়ে দেব।
আমার একটাই প্রশ্ন বাকিরা কী করেছে, লিখতে পারে কিনা এইসব নিয়েই যদি ভাবব, লিখব, তাহলে নিজের লেখাটা নিয়ে ভাবব, লিখব কখন? আর তা না করলে আমিও তো জালি লেখাই লিখব আর বসে থাকব কার সঙ্গে শোব বা তেল দেব, যাতে সেটা ছাপা হয় বা পুরস্কার পায়। তাহলে যাদের নিয়ে কুৎসা করছি তাদের আর আমার মধ্যে আলাদা কী রইল?
আর একটা ট্রেন্ড মৃত জনপ্রিয় ব্যক্তির নাম ভাঙিয়ে কুৎসা করে লেখা যাতে বই বিক্রি হয়। বছর কয়েক আগে মলয় রায়চৌধুরি আমাকে ইনবক্স করেছিলেন “আমার পরবর্তী উপন্যাসের নাম রাহুকেতু। কেন্দ্রীয় চরিত্রে সুনীল-শক্তি। প্রকাশ করবে আখর। জানতে হলে পড়তে হবে।” মানে এভাবে যদি বই বেচতে গিয়ে সুনীল,শক্তি, জয় বা বাকিদের হাতিয়ার করতে হয় তাহলে ধরেই নিতে হবে লেখক মৃত। নিজের কলমের প্রতি পাঠক তো দূর তাঁর নিজেরই আর ভরসা নেই। এটা করেই তিনি ছাপার বা পুরস্কারের বৈতরণী পার হতে চাইছেন। সেক্ষেত্রে তিনি যাদের নিয়ে কুৎসা করছেন, তাদের থেকে আরও খারাপ এবং ক্ষতিকারক তিনি। অন্তত আমার তো তাই-ই মনে হয়। এই ট্রেন্ডটার উদ্দেশ্য প্রতিবাদ করা নয়, বরং বিতর্ক তৈরি করে মানুষের নজরে আসার মরিয়া এবং ব্যর্থ চেষ্টা।

Posted by Abhijit Pal at 10:09 PM No comments:
Email ThisBlogThis!Share to XShare to FacebookShare to Pinterest

Tuesday, November 3, 2020

দুই গাণ্ডুর কথাবার্তা : বেলাল চৌধুরী ও চয়ন খায়রুল হাবিব

 চঃ এটা মজার, কৃত্তিবাসের একটা প্রধান অংশই সুনীলকে না জানিয়ে হাংরি আন্দোলনে জোগ দিয়েছিল।শক্তি, সন্দীপনও চলে গিয়েছিল।কিন্তু ঐসব ঈস্তাহারত পড়া যায় না, এতই পচা।সুনীলকে ওরা জানায় নি কেন?
বঃ ইর্ষা, ভয়।সমির আবার সুনীলদার বন্ধু ছিল।“ধর্মে আছি, জিরাফে আছি” নিয়ে শক্তির তখন সাঙ্ঘাতিক অবস্থা, এক বসায় দশটা কবিতা লিখে ফেলছে। ও বুঝে গিয়েছিল সমির, মলয়দের হাতে লেখা নেই।ও বুঝেছিল যে হাংরিদের সাথে থাকলে ওর কবিতা ধ্বংশ হয়ে ্যাবে।খুব সম্ভবত সেই প্রথম শক্তি সুনীলদার কবিতার ক্ষমতাও বুঝতে পেরেছিল।ও আবার কৃত্তিবাস বলয়ে ফিরে আসে।টাইম ম্যগাজিন বিটদের কথা বলতে গিয়ে হাংরিদের সম্পর্কে বলেছিল।ঐটুকুই। লেখা কই?বোগাস।
চঃ যে সুনীলকে ওরা ওদের সাথে ডাকেনি , জ়েলে নেবার পর তাকেই অনুনয় করছে আদালতে গিয়ে ওদের কবিতার পক্ষ্যে সাফাই গাইতে!
বঃ মলয় ওটা করেছিল।সুনীলদাকে নিজে গিয়ে ও সাক্ষ্য দিতে বলেছিল।ওর জ়েল দন্ড ঠেকাতেই সুনীলদা ওর কবিতাকে উত্তির্ন না মনে করলেও বলেছিল “সার্থক কবিতা”।
চঃ শক্তি কি করেছিল?
বঃ সমির, মলয়দের এক বোনের সাথে প্রেম করেছিল।ওদের অনেকগুলো বোন ছিল।
চঃ নাম কি বোনটার?
বঃ শিলা।
চঃ শিলা রায় চৌধুরি!শক্তির প্রেমিকা!হো হো হো...
বঃ শক্তির আবার প্রেম, ফ্রেম।ফস্টি নষ্টি আর কি!

Posted by Abhijit Pal at 10:06 PM No comments:
Email ThisBlogThis!Share to XShare to FacebookShare to Pinterest
Labels: Hungry Generation, Hungryalism.

Friday, August 7, 2020

প্রবুদ্ধসুন্দর কর-এর ঈর্ষা

প্রবুদ্ধসুন্দর কর-এর ঈর্ষা

হাজার বছরের বাংলা কবিতার গু-গোবর টানতে আমরা রাজি নই, এরকমই ঘোষণা দিয়েছিলেন হাংরি জেনারেশন আন্দোলনের কবি শৈলেশ্বর ঘোষ। ঐতিহ্যকে অস্বীকার করে নিজেদের স্বয়ম্ভূ প্রমাণ করার তৎপরতার ভেতর যৌবনধর্মোচিত ঔদ্ধত্য যেমন রয়েছে, তেমনি হাজার বছরের ঐতিহ্যের আবহমানতার তলায় নিজেদের সঙ্ঘবদ্ধতার সাম্রাজ্যবিস্তারকে চাপা পড়তে দেখার অমূলক এক ভয় ও নিরাপত্তার অভাববোধও রয়েছে বই-কি।

পরবর্তী সময়ের তরুণেরা অবশ্য বোকামি করে এরকম কোনো ঘোষণা দেননি, শৈলেশ্বর-মলয়-প্রদীপ-বাসুদেব-সুভাষদের হাংরি আন্দোলনের গু-গোবর টানতে আমরা রাজি নই। বরং আহরণের পর আত্মস্থ করে নিজেদের সঞ্চারপথ এগিয়ে নিয়ে গেছেন ক্রমশ। কিছু ছিটমহলের জন্ম দিয়ে হাংরি আন্দোলন শেষ অব্দি হয়ে উঠল দুলাল চন্দ্র ভড়ের তালমিছরি। কার সই যে আসল আর কার সই যে জাল, তা আজও অমীমাংসিত।

Posted by Abhijit Pal at 6:27 AM No comments:
Email ThisBlogThis!Share to XShare to FacebookShare to Pinterest

পলাশ বর্মণের ঈর্ষা

পলাশ বর্মণের ঈর্ষা

আমি শিখি; আপনি?

'...ছন্দ-যতিচিহ্ন-অন্বয় না-জানা কিছু কবিতামুদ্রণখোর কচিকাঁচা-দরকচা আছেন, তেমনই আছেন কিছু ভীমরতিপ্রাপ্ত, রতিবর্জিত ও অসার ক্ষুধান্দোলনজাত প্রাক্তন কবিও।'

উদ্ধৃতাংশটি হয়তো আপনাদের কারও কারও চোখে পড়ে থাকবে। যাঁদের চোখে পড়েনি, তাঁরাও এখন মনোযোগ দিতে পারেন। গতকাল 'কবি সুতপা সেনগুপ্তের সঙ্গে ঈশ্বর বিদ্যাসাগরের গোপন সম্পর্ক বিষয়ে মীমাংসা' শীর্ষক পোস্টে আমি একথা লিখেছিলাম।

মাননীয় প্রতিবাদীগণ, আপনারা প্রায় কেউ নিশ্চয়ই বোঝেননি, যে, 'কিছু ভীমরতিপ্রাপ্ত, রতিবর্জিত ও অসার ক্ষুধান্দোলনজাত প্রাক্তন কবিও' বলতে আমি কী ইঙ্গিত করেছিলাম, তাই তো? হয়তো পুরোনো ও মেধাবী কেউ বুঝে থাকবেন। তবে, অধিকাংশ হুজুগে তরুণ প্রতিবাদীই যে বুঝবেন না, এটা আমার কাছে প্রত্যাশিতই। এর সহজ কারণ, এঁরা পড়েন না; বাংলা কবিতার ধারা বা ইতিহাস কিছুই জানেন না। এঁদের আমি 'ছন্দ-যতিচিহ্ন-অন্বয় না-জানা কিছু কবিতামুদ্রণখোর কচিকাঁচা-দরকচা' অভিধায় সসম্মান ভূষিত করেছি। এঁরা এসব জানলে, বুঝলে আমাকে দ্বিতীয়বার আক্রমণ করতেন। এবং, সজ্ঞানে জানাই, এই দ্বিতীয় আক্রমণটি ঘটলে আমার ভালো লাগত। বুঝতাম, তরুণরা খবর রাখেন, পড়েন, খানিক অধ্যয়ন করার প্রতি আগ্রহী। দুর্ভাগ্য, তা ঘটল না।

এখন, প্রশ্ন হল, আমার ইঙ্গিতটি কী ছিল?

ভীমরতিপ্রাপ্ত
রতিবর্জিত
ক্ষুধান্দোলনজাত

এই তিনটি শব্দই ছিল মূল সংকেত। প্রথম শব্দটি থেকে সহজ অর্থে এলে দাঁড়ায়, যাঁদের ইঙ্গিত করা হয়েছে, তাঁরা বেশ বয়স্ক। দ্বিতীয় শব্দটি মজা করে বলা, বয়স্ক মানুষের রতিকর্ম থাকবে না, এটাই সাধারণভাবে স্বাভাবিক, কিন্তু, যৌনতার আগ্রহ তো সজাগই থাকে, তাই না? শব্দগুলোর মধ্যে তৃতীয় শব্দটিই সুনির্দিষ্ট সংকেত দেয়। কী? শব্দটিকে ভাঙলে কী পাই? ক্ষুধা, আন্দোলন ও জাত। অর্থাৎ, ক্ষুধা-সংরক্ত আন্দোলন থেকে উৎসারিত। এবার হয়তো ধরতে পেরেছেন, যে, আমি ষাটের দশকের বিখ্যাত হাংরি মুভমেন্টের কথা বলছি। তাহলে, বোঝাই গেল, সেই আন্দোলনের সঙ্গে যাঁরা ছিলেন বা সেই আন্দোলনের এজেন্ডা অনুযায়ী যে আকর্ষণীয় কাব্য আন্দোলন গড়ে উঠেছিল, তার কুশীলবদের প্রতিই আমার ইঙ্গিত। কিন্তু, এর পরেও প্রশ্ন থেকে যায়। আমি কি তাঁদের সকলের কথা বলতে চেয়েছি? না। এক, শুধু কবিদের কথা বলেছি। দুই, সব কবিদের নয়, তাঁদের মধ্যে যিনি বা যাঁরা বিদ্যাসাগর সম্পর্কিত সুতপা সেনগুপ্তের প্রতি-মন্তব্যে সাংঘাতিক প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন, আমি আরও নির্দিষ্ট করে তাঁর বা তাঁদের কথাই বলেছি। কে বা কে কে এই প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করেছেন? যাঁর পোস্ট আমার চোখে পড়েছে, তিনি শ্রদ্ধেয় মলয় রায়চৌধুরী। চেনেন নাকি তাঁকে, জানেন?‍‍‍‍ পড়েছেন তাঁর কোনও লেখা? বেশ, এই পোস্টের শেষে তাঁর একটি কবিতা দিচ্ছি, পড়ুন। তবে, তাঁকে কেন আমি 'প্রাক্তন কবি' বললাম বা কে তাঁদের আন্দোলন আমার কাছে 'অসার', সে দীর্ঘ আলোচনা বারান্তরে হতে পারে।

কথা হল, আপনারা অধিকাংশই এসব বোঝার মতো অবস্থায় না পৌঁছলেও, স্বয়ং মলয় রায়চৌধুরী আমার পোস্ট খেয়াল করেছেন, পড়েছেন। আপনারা হলে, কী করতেন? প্রতিবাদের নামে হাল্লা মাচাতেন, দল পাকিয়ে নিজেদের আরও মূর্খ ও নীচ প্রমাণ করার জন্যে গুলতানি করতেন, তাই না? আমার কাছে শিক্ষা এই, যে, মলয়বাবু এসব করলেন না। আসলে, এসব করার কথাও নয়। আর, ঠিক এখানেই ওঁদের উচ্চতার মানুষ ও মননের সঙ্গে পার্থক্য আমাদের। আমার মনে হয়, তিনি ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের আদর্শ প্রকৃত অর্থেই অনুধাবন করতে পেরেছেন, যা আমাদের কাছে এখনও অধরাই। আমার গতকালকের পোস্টে দেওয়া বিদ্যাসাগরের একটি প্রাসঙ্গিক দৃষ্টিভঙ্গি এখানে আবার উদ্ধার করছি:

'প্রতিবাদী মহাশয়েরা স্ব স্ব উত্তরপুস্তকে বিস্তর কথা লিখিয়াছেন; কিন্তু, সকল কথাই প্রকৃত বিষয়ের উপযোগিনী নহে। যে সকল কথা প্রকৃত বিষয়ের উপযোগিনী বোধ হইয়াছে, সেই সকল কথার যথাশক্তি প্রত্যুত্তর প্রদানে প্রবৃত্ত হইলাম। আমি এই প্রত্যুত্তর প্রদান বিষয়ে বিস্তর যত্ন ও বিস্তর পরিশ্রম করিয়াছি। পাঠকবর্গের নিকট বিনয়বাক্যে প্রার্থনা এই, তাঁহারা যেন, অনুগ্রহ প্রদর্শন পূর্ব্বক, নিবিষ্ট চিত্তে, এই প্রত্যুত্তর পুস্তক অন্ততঃ এক বার আদ্যোপান্ত পাঠ করেন, তাহা হইলেই আমার সকল যত্ন ও সকল শ্রম সফল হইবেক।'
(বিধবাবিবাহ, দ্বিতীয় পুস্তক)

মলয় রায়চৌধুরী আমার পোস্টে কোন বিষয়ে কী কমেন্ট লিখলেন, তা সঙ্গের ছবিতে (স্ক্রিনশট) দেখুন। এবার, আসুন, তাঁর একটি কবিতা পড়া যাক:
______
নখ কাটা ও প্রেম

রবীন্দ্রনাথ, দেড়শ বছর পর একটা প্রশ্ন আপনাকে:
কে আপনার নখ কেটে দিত যখন বিদেশ-বিভূঁইয়ে--
সেই বিদেশিনী? নাকি চৌখশ সুন্দরী ভক্তিমতীরা?
যুবতীরা আপনার হাতখানা কোলের উপরে নিয়ে নখ
কেটে দিচ্ছেন, এরকম ফটো কেউ তোলেনি যে!
ওকাম্পোর হাঁটুর উপরে রাখা আপনার দর্শনীয় পা?

মহত্মা গান্ধীর দুই ডানা রাখবার সাথিনেরা
বোধহয় কেটে দিত নখ; কেন-না বার্ধক্যে পৌঁছে
নিজের পায়ের কাছে নেইলকাটার নিয়ে যাওয়া, ওফ, কী
কষ্টকর, আমার মতোন বুড়ো যুবতী সঙ্গীহীন পদ্যলিখিয়েরা
জানে; প্রেম যে কখন বয়সের দাবি নিয়ে আসে!

ফিসফিসে-লোকে বলে সুনীলদার প্রতিটি নখের জন্যে
উঠতি-কবিনী থাকে এক-একজন। জয় গোস্বামীরও
ছিল; তারা ঝাঁপিয়ে পড়েছে সমুদ্রের পাঁকে চোখ বুজে।
চাইবাসার ছোটোঘরে শক্তিদার নখ কেটে দিচ্ছেন প্রেমিকাটি
দেখেছি যৌবনে। বিজয়াদিদির নখ কেটে দেন কি শরৎ?

যশোধরা, তোর নখ কেটে কি দিয়েছে তৃণাঞ্জন কখনও?
সুবোধ, আপনি নখ কেটে দিয়েছেন মল্লিকার পা-দুখানি
কোলের উপরে তুলে? কবি কত একা টের পেতে তার পা-এ
তাকালেই বোঝা যায়। যেমন জীবনানন্দ, হাজার বছর
খুঁজে চলেছেন কোনো এক বনলতা নখ কেটে দিয়ে যাবে
তাঁর...
______

আবার কবির পায়ের দিকে তাকাই আমি।

ছবিতে থাকতে পারে: 1 জন, যে টেক্সটে 'Replies মলয় রায়চৌধুরী সিরাজ সম্পর্কে সিরাজের এক জাঠতুতো ভাই যা লিখে গেছে, তা থেকে বোঝা যায় সিরাজ অত্যন্ত দুশ্চরিত্রের লোক পায়ুকামী, আর হিন্দুবিরোধী ছিল এই বইটি প্রমাণ WILLIAM DALRYMPLE THE ANARCHY RELENTLESS RISE INDIA COMPANY 9h Like Reply Palash Barman মলয় রায়চৌধুরী বিশিষ্ট জনপ্রিয় এই লেখক ইতিহাসের নানান অলিগলি অন্যরকম করে চিনিয়ে চলেছেন। তাই বলে, সবসময় একমত হতেই হবে, এমন বলছি না।' লেখা আছে
  • Aditi Basuroy
    Aditi Basuroy Tomar ar kaj nei naki ? Jottosob -
    1

সঞ্চয়িতা ভট্টাচার্য
2দিন ·

সুতপা সেনগুপ্ত,
অধ্যাপক ও কবি

আপনি ইসলাম ধর্ম নেয়া সত্বেও ন্যাড়া হয়ে বাবার শ্রাদ্ধ করে তার ফোটো আপলোড করেছিলেন, মনে আছে । নিঃসন্দেহে অন্তরদ্বন্দ্বে ভুগছেন, কেননা, মহাশয়া, সম্প্রতি ফেসবুকে আপনার একটি মন্তব্য প’ড়ে যারপরনাই লজ্জিত হয়েছি। সেখানে আপনি স্মৃতি রোমন্থন করতে গিয়ে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর মহাশয় সম্পর্কে লিখেছেন- ‘এক অসহায় মহিলাকে তিনি সহায়তা দিয়েছিলেন, পরে তার সঙ্গে বিদ্যাসাগরের একটি সম্পর্ক ঘটে যায় ও এক সন্তান হয়’ । আপনি প্রাজ্ঞজন ও বাংলাভাষার বিশিষ্ট কবি। সেই সুত্র ধ’রে বলি, আধুনিক বাংলাভাষার বর্ণমালা ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের দান ; ঐতিহাসিক তথ্যের ভিত্তিতে এটাও প্রতিষ্ঠিত যে, পিছিয়ে পড়া ও অসহায় নারীর সামাজিক মানোন্নয়নের জন্য তিনি জীবনভর লড়াই করেছেন। এই প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, যৌনতা একটি ব্যক্তিগত বিষয় এবং প্রেমজ যৌনতা বা সম্মতিসাপেক্ষে যৌনতা কখনই কোন প্রকার প্রশ্নচিহ্নের সামনে পড়ে না। কিন্তু বিদ্যাসাগর মহাশয় সম্পর্কিত আপনার মন্তব্যটির কোন ঐতিহাসিক ভিত্তি রয়েছে ব’লে মনে হয় না।
.
বলতে বাধ্য হচ্ছি যে, আপনি বিশিষ্ট এক কেচ্ছাকবিকে, হয়তো, আড়াল করতে গিয়ে এরূপ মন্তব্য করেছেন। উক্ত অধ্যাপক কবির জন্য সম্প্রতি ঐতিহ্যবাহী একটি পত্রিকার সঙ্গে বাংলাভাষা সাহিত্যে যুক্ত অনেকেই ব্যথিত ও লজ্জিত হয়েছেন। একজন জীবিত ও সাধারণ কবিকে বাঁচাতে আধুনিক বাংলাভাষার অন্যতম রূপকারকে অসম্মান করার অধিকার আপনার নেই।পরিশেষে বলি, আপনি আধুনিক বাংলাভাষা ও সাহিত্যের পিতৃপুরুষের সঙ্গে সঙ্গে সুমহান ঐতিহ্যকে কালিমালিপ্ত করতে চেয়েছেন। তাই ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর সম্পর্কিত কু-মন্তব্যের সাপেক্ষে এই ফেসবুকে প্রমাণ দাখিল করার জন্য আপনাকে সাতদিন সময় দেওয়া হলো, অন্যথায় আপনার অপারগতা বৃহত্তর আন্দোলনের পথ সুপ্রশস্ত করবে।
.
ইতি
মলয় রায়চৌধুরী




Surya Ghose
2দিন ·

সুতপা সেনগুপ্ত,
অধ্যাপক ও কবি

আপনি ইসলাম ধর্ম নেয়া সত্বেও ন্যাড়া হয়ে বাবার শ্রাদ্ধ করে তার ফোটো আপলোড করেছিলেন, মনে আছে । নিঃসন্দেহে অন্তরদ্বন্দ্বে ভুগছেন, কেননা, মহাশয়া, সম্প্রতি ফেসবুকে আপনার একটি মন্তব্য প’ড়ে যারপরনাই লজ্জিত হয়েছি। সেখানে আপনি স্মৃতি রোমন্থন করতে গিয়ে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর মহাশয় সম্পর্কে লিখেছেন- ‘এক অসহায় মহিলাকে তিনি সহায়তা দিয়েছিলেন, পরে তার সঙ্গে বিদ্যাসাগরের একটি সম্পর্ক ঘটে যায় ও এক সন্তান হয়’ । আপনি প্রাজ্ঞজন ও বাংলাভাষার বিশিষ্ট কবি। সেই সুত্র ধ’রে বলি, আধুনিক বাংলাভাষার বর্ণমালা ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের দান ; ঐতিহাসিক তথ্যের ভিত্তিতে এটাও প্রতিষ্ঠিত যে, পিছিয়ে পড়া ও অসহায় নারীর সামাজিক মানোন্নয়নের জন্য তিনি জীবনভর লড়াই করেছেন। এই প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, যৌনতা একটি ব্যক্তিগত বিষয় এবং প্রেমজ যৌনতা বা সম্মতিসাপেক্ষে যৌনতা কখনই কোন প্রকার প্রশ্নচিহ্নের সামনে পড়ে না। কিন্তু বিদ্যাসাগর মহাশয় সম্পর্কিত আপনার মন্তব্যটির কোন ঐতিহাসিক ভিত্তি রয়েছে ব’লে মনে হয় না।
.
বলতে বাধ্য হচ্ছি যে, আপনি বিশিষ্ট এক কেচ্ছাকবিকে, হয়তো, আড়াল করতে গিয়ে এরূপ মন্তব্য করেছেন। উক্ত অধ্যাপক কবির জন্য সম্প্রতি ঐতিহ্যবাহী একটি পত্রিকার সঙ্গে বাংলাভাষা সাহিত্যে যুক্ত অনেকেই ব্যথিত ও লজ্জিত হয়েছেন। একজন জীবিত ও সাধারণ কবিকে বাঁচাতে আধুনিক বাংলাভাষার অন্যতম রূপকারকে অসম্মান করার অধিকার আপনার নেই।
পরিশেষে বলি, আপনি আধুনিক বাংলাভাষা ও সাহিত্যের পিতৃপুরুষের সঙ্গে সঙ্গে সুমহান ঐতিহ্যকে কালিমালিপ্ত করতে চেয়েছেন। তাই ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর সম্পর্কিত কু-মন্তব্যের সাপেক্ষে এই ফেসবুকে প্রমাণ দাখিল করার জন্য আপনাকে সাতদিন সময় দেওয়া হলো, অন্যথায় আপনার অপারগতা বৃহত্তর আন্দোলনের পথ সুপ্রশস্ত করবে।
.
ইতি
সূর্য ঘোষ

(লেখাটি শ্রদ্ধেয় কবি সাহিত্যিক মলয় রায়চৌধুরী -র টাইমলাইন থেকে নেওয়া)।


  • Dhruba Chatterjee
    Dhruba Chatterjee শিক্ষক দিবস উদযাপন করি সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণানের জন্ম দিন কে সন্মান জানিয়ে । কিন্তু শিক্ষক দিবস উদযাপন করা উচিত বিদ্যাসাগরের জন্মদিন কে সন্মান জানিয়ে । ব্যক্তিগত মতামত । মনে হল । তাই বললাম ।
    1
  • লাইক করুন
  •  · জবাব দিন
  •  · 2দিন
আরও 6টি উত্তর দেখুন
  • Surya Ghose
    লেখক/লেখিকা
    Surya Ghose Dhruba Chatterjee একদম খাঁটি কথা বলেছেন। আমি কষ্ট পাই যখন দেখি আমাদের অতি গর্বের সুপ্রাচীন থেকে নব্য দিগন্ত অবধি আমাদের সম্পদ কে আমরা চিনে উঠতেই পারলাম না। বলা ভালো চেনানো হয় নি। আর রবিঠাকুরের মতো যারা এসব বলেছিল, তাদের কথার আমল দিই নি।
    2
    • লাইক করুন
    •  · জবাব দিন
    •  · 2দিন

  • Palash BarmanPalash Barman জবাব দিয়েছেন
       ·  1টি জবাব
  • Rima Sarkar
    Rima Sarkar মগজপুষ্টি। এই লেখা নেবার ক্ষমতা 'ছন্দ-যতিচিহ্ন-অন্বয় না-জানা কিছু কবিতামুদ্রণখোর কচিকাঁচা-দরকচা'-দের নেই। সারাদিন ফেসবুকে লাফালে পড়বে কখন! সবাই শর্টকাট চায়। যিনি বিদ্যাসাগরের প্রসঙ্গ তুলেছেন আলটপকাভাবে,তিনি যা ক্ষতি করেছেন, সেই নিয়ে যে পারছে স্বল্প পড়াশোনার বদহজম উগরে আরো ক্ষতি করছে।
    2
    • লাইক করুন
    •  · জবাব দিন
    •  · 1দিন
    Palash BarmanPalash Barman জবাব দিয়েছেন
       ·  1টি জবাব
  • Saswati Dattaroy
    Saswati Dattaroy ইয়ে---- বুঝেছিলাম। ব্যাখ্যা কেন!
    1
    • লাইক করুন
    •  · জবাব দিন
    •  · 1দিন
    Saswati DattaroySaswati Dattaroy জবাব দিয়েছেন
       ·  3টি জবাব
  • Ranu Ghosh
    Ranu Ghosh আহা! দুটো লেখাই ভয়ংকর। আজ এবং কবি সুতপা সেনগুপ্ত প্রসঙ্গে। লাভলি
    1
    • লাইক করুন
    •  · জবাব দিন
    •  · 1দিন
  • Tapas K Ray
    Tapas K Ray Idaning arai chale chutcho... Baji mat hobe kina Ram jane
    1
    • লাইক করুন
    •  · জবাব দিন
    •  · 1দিন
    Palash BarmanPalash Barman জবাব দিয়েছেন
       ·  1টি জবাব
  • Soumen Guharoy
    Soumen Guharoy অপ্রয়োজন ও যে প্রয়োজনকে কতটুকু চেনায় । এই ঠাঁইনড়া মুহূর্তে বড়ো বেশি প্রয়োজন নিজেকে চেনার ।
    1
    • লাইক করুন
    •  · জবাব দিন
    •  · 1দিন
  • Dinabandhu Bas
    Dinabandhu Bas সিরিজের ঐ ভাইয়ের লেখা বইটির নাম ও ভাই-এর নাম যদি জানাও তাহলে সুবিধা হয়। যদিও ঐ ভাই এখন জনগণের চাপে নির্বাসনে আছে এবং নিজের পরিচয় গোপন রেখে! আর এইসব বাদ দিয়ে পজিটিভ লেখা লেখ। আর সদন চত্বরতো বন্ধ! আছো কেমন?
    1
    • লাইক করুন
    •  · জবাব দিন
    •  · 1দিন
    Palash BarmanPalash Barman জবাব দিয়েছেন
       ·  1টি জবাব
  • শাপলা সপর্যিতা
    শাপলা সপর্যিতা মলয়রায় চৌধুরীর বিষয়ে কফি হাউজের কোনো এক আড্ডায় শুনেছিলাম। আজ তার লেখা পড়লাম। খুব আগ্রহ নিয়ে পড়তে শুরু করেছিলাম। কিন্তু কবিতাটি আমার ভালোলাগলো না (যদিও ছোট মুখে বড় কথা হয়ে গেল)।‍ মনে হল অগ্রজ প্রয়াত কবিদের উদাহরণ তুলে বাস্তবিক কিছু বর্তমান কবিকে খোঁচা...আরও দেখুন
    1
    • লাইক করুন
    •  · জবাব দিন
    •  · 17ঘন্টা
    •  · আপডেট করা হয়েছে
    Palash BarmanPalash Barman জবাব দিয়েছেন
       ·  1টি জবাব
       3ঘন্টা
  • Aniruddha Kar
    Aniruddha Kar Sir , history kokhonoi amar favourite subject chilo na , ar ami o khub monojogi chatra chilam na . Sei jonno apnar lekha gulo amar marhae thik dhukche na .
      • লাইক করুন
      •  · জবাব দিন
      •  · 2দিন
    আরও 3টি উত্তর দেখুন
  • Dhruba Chatterjee
    Dhruba Chatterjee একদম । সত্যিই বিদ্যাসাগর সম্পর্কে এই কথা গুলো শোনাও পাপ ।
    1
    • লাইক করুন
    •  · জবাব দিন
    •  · 2দিন
  • Manik Ganguly
    Manik Ganguly Darun step,ebar proman hobey
    1
  • Posted by Abhijit Pal at 12:00 AM No comments:
    Email ThisBlogThis!Share to XShare to FacebookShare to Pinterest

    Wednesday, May 27, 2020

    কৌশিক সরকারের ঈর্ষা

    মলয় রায়চৌধুরীকে লেখা খোলা চিঠি:
    হাংরি কোনো আন্দোলন নয়
    কোনো ঐতিহাসিক ঘটনা মালিকানা নয় আইদার হাজত মুচলেকা ওসব খুচরো মজা আসলে হাংরি একটা আইডিয়া প্রেরণা একটা লেগ্যাসি টাস্ক উত্তরাধিক্কার 🔥
    Posted by Abhijit Pal at 9:38 PM No comments:
    Email ThisBlogThis!Share to XShare to FacebookShare to Pinterest
    Labels: Kausik Sarkar

    অর্ক দেবের ঈর্ষা

    Arka Deb শুনুন মলয় রায়চৌধুরী, এসব ভাঙিয়ে আর ক'দিন? ছোটলোকের ছোটবেলা এমনিতেই ভাল লেখা, বারবার পড়ব। এসব জাবর কাটেন কেন, ব্রজ রায় বলে এক ভদ্রলোক কলকাতায় থাকেন, একটা বাড়ির চিলেকোঠায় এক কামরা ঘরে। সুরজিৎ সেন খুব ভাল ভাবে চেনেন ওঁকে। ডান কাঁধটা ভাঙা। পার্ক স্ট্রিট ব্যাঙ্ক ডাকাতি-সহ নানা মামলায় ধরা পড়েন। পুলিশ হেফাজতে যা টর্চার হয়েছে শুনলে মুতে ফেলতে হবে। নোবেল কজে ডাকাতি করেছিলেন। কোনও ক্লেম টু ফেম নেই, এসব কাউকে বলেনও না, এমন একশো নাম রয়েছে।

    আপনার ভাল লেখা এমনিই পড়ব। এসব ন্যাকামি করেন কেন, এসব ভাঙাবেন আর কতদিন! হাংরি ধারণাটা লেখাজীবীর প্রেরণা। প্রেরণাই হতে পারে বড়জোর। আন্দোলন না বাল।

    আমি কে সেটা ইনবক্সে নিজেকে প্রোমোট করার আগে নিজেকেই জিজ্ঞেস করবেন অথবা আপনার স্বর্গত পিতাকে জিজ্ঞেস করুন।

    আশা করা যায়, জুতোটা ভাল মারা হয়েছে।
    আশা করা যায়, জুতোটা ভাল মারা হয়েছে।


    Posted by Abhijit Pal at 9:32 PM No comments:
    Email ThisBlogThis!Share to XShare to FacebookShare to Pinterest
    Labels: Arka Deb
    Older Posts Home
    Subscribe to: Posts (Atom)

    Total Pageviews

    Life & Time of Hungry Generation Artist

    Life & Time of Hungry Generation Artist
    Anil Karanjai by Juliet Reynolds

    About Me

    Abhijit Pal
    View my complete profile

    Blog Archive

    • ▼  2022 (1)
      • ▼  August (1)
        • হাংরি জেনারেশন সাহিত্য ও শিল্প আন্দোলন কেন সফল : অ...
    • ►  2021 (1)
      • ►  September (1)
    • ►  2020 (10)
      • ►  November (1)
      • ►  August (2)
      • ►  May (3)
      • ►  February (4)
    • ►  2018 (29)
      • ►  December (1)
      • ►  November (5)
      • ►  October (3)
      • ►  September (1)
      • ►  August (9)
      • ►  July (9)
      • ►  June (1)
    Simple theme. Powered by Blogger.