Friday, December 14, 2018

ইমরান মেহেদীর ঈর্ষা

 
হাংরি জেনারেশন // ইমরান মেহেদী
.
বুলেটিন! বুলেটিন! বুলেটিন!
চোখের পুকুরে টুপটাপ ছায়াচিত্র;দৃশ্যলোক।
তারার ঠোঁটে দগ্ধ সিগারেট ঝাঁঝালো স্লোগান।
মন ছুঁয়ে তীক্ষ্ণ আলপিন বৃষ্টিপাত;বিমূর্ত কোলাজ।
অভিমানের রানওয়ে জুড়ে জোনাকীর কিচিরমিচির।
আলোর পরাবাস্তবতার সফট্ টাচ টাঙ্গিয়ে দিয়ে
রেঁনেসা মিছিল,রংমশাল;লেটস গো--অপারেশন হাংরি মুভমেন্ট!
রসুই ঘরে আস্বাদনম্মুখ জিহবা আত্মতৃপ্তির ঝলসে যাওয়া কম্পোজিশন।
.
বন্ধুরা আলো পারে;জোছনা ফুলে লেখে নাম,অবিরাম।
আমরা ছুটছি অন্য আলোর সন্ধানে!
আমাদের গ্রাম,শহর অক্ষর ভরা আলোক চিত্র;শিল্পাকাশ খামার।
বুলেটিনে বদলে যাওয়া জীবন কবির ইস্তেহার।
নতুন সূর্যের লালিমা হস্তগত করার প্রত্যয় কফিশপে নব চেতনার বিস্ফোরণ;নব জাগরণ।
.
কবিতার ডায়েরীতে রাষ্ট্রতন্ত্রের গাছ পুড়ছে দ্রোহের অগ্নিৎপাতে।
প্রতিবাদ ভিনদেশী তারায় তারায় আলোড়ন,গুঞ্জন।
ডাকছে মেঘনাদ,বন পাতা,নীল শব্দ,মিছিলের নিখিল;
দুষ্টমি লুটোপুটি চড়ুইভাতি;রাষ্ট্রের সাথে কানামাছি,সাপ-লুডু।
একটি গাছের নীচে দ্রোহের পাঠ; আগুন প্রেমের রঙ্গন গান।
.
ভবঘুরে ঋষি,দেহতত্ত্ব বাউল,প্রথা বিমুখ কবিয়াল রঙরুটে হাঁটছে ফাগুন নদী!
ধারা,উপবিধির ব্যারিকেড ভেঙ্গে তছনছ;মামলা,জেল,জুলুম সব কিছু তুচ্ছ।
ভেঙ্গেছে শব্দের শৃঙ্খল।
পাখীদের ষ্টুডিওতে জীবনমুখী লিরিকস্!
গানবাড়ি হয়ে আছে দগ্ধ পৃথিবী।
ক্ষুধার্ত কলমের ক্ষ্যাপামো!
অবৈধ যৌনাচার,রক্তবীজ,পুঁজ,ক্ষত সংক্রমিত সমাজ ব্যবস্থায় প্রতিবাদী বাক্যতত্ত্বের ঘৃণ্য ধিক্কার,সমুচিত শ্লেষাত্বক লাথি।
.
রোদের সেলুলয়েডে শুকাচ্ছে দুখিনীর আটপৌড়ে স্বপ্ন;অস্ফুটো স্মৃতির আঁধার।
ভিজে যাওয়া বয়স শীতে জবুথবু খুঁজে ফেরে কবিতার ওম।
জোছনার অনুবাদ করা হলে এক গ্লাস জীবন হাসছে খলখল শব্দে!
সূর্যের আশ্রমে মায়ের গল্প লিখে রাখে মেঘ চারকোলে আঁকা পোট্রেয়ট!
এসব ছড়িয়ে গেলো ঝরা পাতার মতো কফিশপ,কলেজস্ট্রীট,গ্রন্থাগার,রাষ্ট্রযন্ত্রের কতিপয় আমলা, মন্ত্রী পাড়ায়,ধর্মতলায়।
.
ঈশ্বর,মানুষ,বিজ্ঞান,গনতন্ত্র পরাজিত,
কবিতা এখন একমাত্র আশ্রয়।
এখন কবিতা রচিত হবে অর্গ্যাজমের মতো স্বতঃস্ফূর্তিতে।
অশ্লীল গালাগাল,রাষ্ট্রতন্ত্রের বিপক্ষে বিপ্লবী আন্দোলনের ব্লু-প্রিন্টের মতো ছড়িয়ে পড়ুক সাইক্লোস্টাইল মেনিফেস্টো।
সমীর,শক্তি,বিনয়,দেবী কবি পদাতিক হাংরি জেনারেশন!
কবিতার বিপ্লব,লিটেল ম্যাগ প্রথাবিমুখ শব্দের মিছিল।
ঘুম বীজে নির্লিপ্ত থাক চাঁদের শরীর;নৈবেদ্য শিল্পকথা।
.
কবিতা সভ্যতাকে এগিয়ে নিয়ে যায় না,বিভ্রমের বাগানে পুনরায় বৃক্ষরোপন করে না।
কবিতার বাগানে বারুদের গন্ধ,তির্যক শব্দের ঝলসে যাওয়া ত্রাসের স্ফুলিঙ্গ।
আগুন জলে জীবন মাখি;প্রেমে ও দ্রোহে।
বাবুই পাখীর শৈল্পিক হাতে কবিতার সায়ানাইট...!
একটি লিটল ম্যাগে হাংরি জেনারেশনের অভ্যুদয় হবে পোষ্টমডার্ণিজম আইডিওলজি থিমে।
লেটস গো---হাংরি মুভমেন্ট!

Sunday, November 18, 2018

রিজোয়ান মাহমুদ ( বাংলাদেশ ) -এর ঈর্ষা


কবিতা আন্দোলন, শ্রুতি আন্দোলন, হাংরি জেনারেশন, স্যাড জেনারেশন, এংরি জেনারেশন ঐতিহাসিক ও সামাজিক অভীপ্সা থেকে লক্ষ্য করলে এ সমস্ত আন্দোলনের কোন উৎসভূমি পাওয়া যায় না। এর কোন ইস্তেহার নেই; যে সমাজে বড় ধরনের কোন অসংগতির কারণে আন্দোলনগুলো কবি-সাহিত্যিকদের মধ্যে নতুন স্বপ্ন ও জাগরণে ভূমিকা রাখতে পারে। এসব কারণ পর্যালোচনা করলে বাংলা কবিতার ঊনিশ শতকীয় দর্শনে কেবল উঠে আসে ক্লেদ বিবমিষা হতাশা ও ক্লান্তি। বিগত পঞ্চাশ বছর আমাদের অনুভূতি ও মেধাকে শোষণ করেছে। পরান্নভোজী ও অধীনস্থ করে রাখা হয়েছে। যাতে বাঙালি না জাগে স্বপ্নে ও সীমানায়, রাষ্ট্রে ও দর্শনে।

উদয়ন ভট্টাচার্যের ঈর্ষা


হাংরি আন্দোলনের ব্যাপারটা আমার কাছে আজও এক আরোপিত প্রচেষ্টা মনে হয়। বিদেশের যে অ্যাংরি জেনারেশনের অনুকরণে হাংরির জন্ম, তার মূলে ছিল পশ্চিমি বৈভবের ফলে সব সহজে পেয়ে যাওয়ার এক মানসিক ক্লান্তি -- যার চূড়ান্ত প্রকাশ, 'মানি কান্ট বাই মি লাভ'-এ। সেই অ্যাঙ্গার ছড়িয়ে পড়েছিল সারা পশ্চিমি দুনিয়ায়। তারই ফলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে ক্যাম্পাস রেভোলিউশনের জন্ম হয়েছিল। নিউইয়র্ক শহরে শুরু হয়েছিল কবিতা আন্দোলন। বাংলায় যে হাংরি আন্দোলনের উৎস ঠিক কী ছিল তা আজও আমার কাছে পরিষ্কার নয়। এই গোষ্ঠীর কবিদের লেখা পড়ে আমার মনে হতো যৌন ক্ষুধাই যেন তাঁদের হাঙ্গারের উৎস। তাঁদের লেখায় দেখি অকারণ যৌনতার ছড়াছড়ি। তাছাড়া এই আন্দোলনের সবচেয়ে পরিচিত মুখ তো গর্ব করে বলতেই ভালোবাসেন যে তাঁকে অশ্লীলতার দায়ে কারাবন্দী করা হয়েছিল। আমার মনে হয়েছে অন্যরকম হতে চেষ্টা করার তাৎক্ষণিক উত্তেজনাই এই আন্দোলনের মূল চালিকাশক্তি হওয়াতে অল্পদিনের মধ্যেই অনেক সহযোগী সরে আসেন। শক্তি চট্টোপাধ্যায় শুরুতে এদের সঙ্গে থাকলেও, পরে সরে এসেছিলেন। আন্দোলনের হোতারা যদিও বলেন পুলিশের হাত থেকে নিস্তার পেতেই তিনি নাকি মুচলেকা দিয়ে সরে এসেছিলেন। কবির মুখে অবশ্য আমি শুনেছি আন্দোলনে বিশ্বাস হারানোই ছিল তাঁর সরে আসার মূল কারণ। তখন, আমার তরুণ বয়সে বাংলা কবিতার জগতটা বোঝার জন্য এই সব তথাকথিত নিয়মভাঙা কবিতাও অনেক পড়েছি, আজ কিন্তু সেসব পড়ার আর কোনো বাসনা হয় না।

অসীম সাহা ( বাংলাদেশ ) এর ঈর্ষা



উগ্রতা যা কিছু পুরনো তাকেই ভেঙে গুঁড়িয়ে দিতে চায়। কোনো তত্ত্ব বা দর্শন যেমন তার নেই, তেমনি অপরিকল্পিত উন্মার্গগামিতার দিকেই তার অভিসার। আধুনিকতার বিদ্রোহের মধ্যেও যেমন একটি সুনির্দিষ্ট শৃঙ্খলা লক্ষ করা যায়, উত্তরাধুনিকতা সেখানে বিশৃঙ্খলাকেই প্রাধান্য দেয়। এই তত্ত্ব সৃষ্টিতে বিশ্বাসী নয়, ভাঙনেই আস্থাবান। যে কোনো ধরনের নিয়ম তাদের প্রতিপক্ষ। ব্যক্তির চেয়ে সমষ্টিই তাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। যদি এগুলোকে উত্তরাধুনিকতার সংজ্ঞা হিসেবে ধরে নিই, তাহলে ষাটের দশকে পশ্চিম বাংলার ‘হাংরি জেনারেশন’ বা ‘শ্রুতি আন্দোলন’ কিংবা বাংলাদেশের ‘স্যাড জেনারেশন’ তাদের মেনিফেস্টোয় যে বিষয়গুলোর প্রতি গুরুত্বারোপ করেছে, সেই আধুনিকতার মধ্যে লক্ষ করা যাবে উত্তরাধুনিকতার চেয়েও ভয়াবহ আত্মঘাতী প্রবণতা ।

বীরেন মুখার্জি ( বাংলাদেশ )-এর ঈর্ষা



বিশ্বকবিতায় ফরাসি সিম্বলিজম, একজিস্টেন-শিয়ালিজম, ফিউচারিজম, ইম্প্রেশনিজম কিংবা স্যুরিয়ালিজমের মতো আন্দোলনগুলো ছিল সময় ও কালকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে এক দৃঢ় অঙ্গীকার। এসব আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায়, কবিগোষ্ঠীর হাতে ‘নতুন প্রপঞ্চ বিনির্মাণের আগে পূর্ববর্তী সামাজিক, রাষ্ট্রিক, অর্থনৈতিক পরিপ্রেক্ষিত বিবেচনায় রেখেই কবিদের এগোতে হয়। একটি নতুন সাহিত্য-আন্দোলন দানা বাঁধে তখনই, যখন তার সম্পূর্ণ উপাদান সমাজদেহের অভ্যন্তরে একটু একটু করে বেড়ে উঠতে থাকে।’ বাংলায়ও কয়েকটি কবিতা আন্দোলনের তথ্য মেলে। ষাটের দশকে পশ্চিম বাংলার ‘হাংরি জেনারেশন’ বা ‘শ্রুতি আন্দোলন’ কিংবা বাংলাদেশের ‘স্যাড জেনারেশন’ তাদের মেনিফেস্টোয় যে বিষয়গুলোর প্রতি গুরুত্বারোপ করেছে, সেই আধুনিকতার মধ্যে উত্তরাধুনিকতার চেয়েও ভয়াবহ আত্মঘাতী প্রবণতা লক্ষ্যযোগ্য। ‘হাংরি আন্দোলন’ বাংলা কবিতায় বাঁক পরিবর্তনের একটি স্পষ্ট ইঙ্গিত দিলেও শেষপর্যন্ত পুরোপুরি সফলতা পায়নি। তবে এ আন্দোলনের পর আলোকপ্রাপ্তির যুক্তিবোধ, যৌন স্বাধীনতা, শৃঙ্খলমুক্তির ঔদার্য ইত্যাদি প্রপঞ্চ হিসেবে পরবর্তী কবিতায় স্থান করে নেয়। বলাই বাহুল্য, বিচ্ছিন্নতা, অনৈক্য, নিঃসঙ্গতা, সংস্কৃতির পচন, অবক্ষয় সমাজেরই একটি প্রপঞ্চ। সাম্প্রতিক কবিরা বিশৃঙ্খলাকে প্রাধান্য দিয়ে ভাঙনে আস্থা রেখেছেন, এমনটি লক্ষ করা যায়। তাই সাম্প্রতিক কবিতা হয়ে উঠছে সংশয় ও সংকটের প্রতিনিধি। পরিবর্তিত এই পরিস্থিতিতে কবিতা হয়ে উঠছে জনবিমুখ। কখনো ‘ভাষা হয়ে পড়ছে সংকেতের দ্বারা অন্তঃসত্ত্বা, ভাব পেয়ে যাচ্ছে ব্যঞ্জনা, কবিতা আসছে এগিয়ে এবং সে কবিতার সবটা শরীর সংকেতের এই সূক্ষ্ম অশরীরী উপস্থিতির দ্বারা এমনভাবে আক্রান্ত যে, কবিতার মূল কাব্যগুণ থেকে তাকে আলাদা করে দেখা সম্ভব নয়। আবার রহস্যময়তা ও জীবনজটিলতার প্রতীকী ব্যঞ্জনা কোনো কোনো ক্ষেত্রে কবিতাকে নির্মেদ গতিময়তা এনে দিলেও সাম্প্রতিক কবিদের সংশয়বাদী মানসিকতা সমষ্টিগত সৌন্দর্যচেতনার ধারা কবিতায় তুলে আনতে সামগ্রিকভাবে ব্যর্থ হচ্ছে, এমনটি অনুমান করা যায়।

Wednesday, November 14, 2018

মেহদি হাসান মুন-এর ঈর্ষা

হাংরিয়ালিস্ট

Mehdi Hassan Moon of Dhaka

(এই গল্পে বর্ণিত সকল স্থান,কাল,ঘটনা,পাত্র কাল্পনিক।শুধুমাত্র হাংরি আন্দোলন সম্পর্কিত বিষয়বস্তুগুলো সত্য।গল্পের ঘটনা বিবর্তনের শিরোনামগুলোতে (ক,খ বা ১,২) এর পরিবর্তে হাংরি আন্দোলন সম্পর্কিত পত্রিকা ও ইশতেহারগুলোর নাম ব্যবহার করা হয়েছে।গল্পে অশ্লীলতা অত্যাধিক,তাই সুশীল পাঠকসমাজকে আগে থেকেই সতর্ক করে দেয়া হল।)
(ক্ষেপচুরিয়াস)
“পোঁদের ওপর বিষফোঁড়া”
-নেতাই…ও নেতাই,বিষফোঁড়া উঠেছে দেখেছিস?
-কোথায় কত্তা?
-ঐ যে দেখিসনে পোঁদের ওপর!
থলথলে রক্ত-পুঁজে ভরা তুলোর মতো নরম।
সেই ৪২ টি বছর ধরে উঠে রয়েছে, এখনো সেরে যাওয়ার নাম গন্ধ নেই।

মাঝে মাঝে ইচ্ছে করে চিকন শলার সুঁই মাথা দিয়ে ঘেচাৎ করে গালিয়ে দেই।
দূষিত রক্তগুলো ঝরে যাক বীর্যের মতো পুঁজেরা ধুয়ে যাক।
কতদিন আর বয়ে নেই এদের বল? আহঃ আঃ আ আ… এতো ব্যাথা করে মাঝে মাঝে জানিস?
শালার সাহস হয় না… তা নাহলে সেই কবেই টিপে মাড়িয়ে দিতাম।
যতদিন যাচ্ছে ফুলে-ফেঁপে ঢুলছে মাদারচোত,
ধুরঃ… যা তো একটা সুঁই নিয়ে আয় গরম করে সেঁকে…
আজ ফোঁড়ার মধুচন্দ্রিমার এখানেই সমাপ্তি টানবো।
অনেক হয়েছে আর না
ঘেচাৎ করে গালিয়ে দেবো…
…………….

সদানন্দ চাটুজ্যে তার সামনে বসে থাকা হ্যাংলা পাতলা ছেলেটার দিকে আবার তাকালেন।তার দিকে ছেলেটার কোনো মনোযোগ নেই।সে মনের আনন্দে তার নাক খুঁটছে।নাক থেকে ময়লা এনে হাতে নিয়ে দেখছে তারপর আশপাশে তাকিয়ে টুক করে মুখে পুরে দিচ্ছে। তিনি খুক খুক করে কেশে উঠলেন।
-তোমার নাম যেন কি বললে?
-জী বলিনি। বলবো?
-হু।
-সমীরণ…সমীরণ দাস।
-এটা কি লিখেছো?
-কবিতা লেখার চেষ্টা করেছি।
-এটাকে তোমার কবিতা মনে হয়? এধরনের অশ্লীল,আজগুবি কবিতা আমি আমার পত্রিকায় ছাপাবো এটা তুমি কিভাবে ভাবলে?
-ভাবি নি তো। আমি জানি আপনি ছাপাবেন।
-হাহাহা…তাই নাকি? তা কিভাবে ছাপাবো আর কেনই বা ছাপাবো?
-তা জানিনা। কিন্তু আপনি ছাপাবেন।
-তোমার কথাবার্তায় কিন্তু আমি বেশ মজা পাচ্ছি ছোকরা। আমার মনে হয় তোমার মাথায় সমস্যা আছে। যাই হোক আমি তোমার কবিতা ছাপাবো না। এইসব ছাইপাশকে আর যাই হোক কবিতা বলেনা বুঝলে। এখন যেতে পারো।একদিনে অনেক বিনোদন দিয়ে ফেলেছো,আর চাই না।
-ঠিক আছে। আমার কবিতাটা দিন।
-কবিতা,না? এই নাও…

সদানন্দ চাটুজ্যে কবিতা লেখা কাগজটি দিয়ে নাকের স্যাঁতস্যাঁতে সর্দি মুছে হাসতে হাসতে তা পাশে রাখা ডাস্টবিনে ফেলে দিলেন এবং প্রথমবারের মতো সমীরণ ছেলেটির চোখে একরাশ বেদনা দেখতে পেলেন।
তখনই সমীরণ বিদ্যুৎগতিতে ডাস্টবিন থেকে কাগজখানা তুলে নিয়ে সদানন্দ চাটুজ্যের মুখ চেপে ধরলো। ধরে রইলো। ধরেই রইলো…
সমীরণ রুম থেকে বের হওয়ার ঠিক আগমুহূর্তে দেখলো সদানন্দ চাটুজ্যের প্রাণহীন চোখদুটি তার দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে আছে।মুখের হাসিটি তখনো অমলিন। (আবার এসেছি ফিরে)
শ্রদ্ধেয় মলয় রায়চৌধুরী,
নমস্কার।কেমন আছেন? আশা করি ভালো। আমাকে আপনি চিনবেন না কারণ আপনার সাথে আমার পরিচয় নাই। দেখা হবার সম্ভাবনাও অত্যন্ত ক্ষীণ। আপনি জানলে হয়তো খুশী হবেন যে আমি আপনার হাংরি জেনারেশন মতবাদের একনিষ্ঠ ভক্ত। আমি ঢাকায় তথা বাংলাদেশে এ মতবাদ প্রতিষ্ঠা করতে ইচ্ছুক। কেননা আমাদের এপার বাংলায় কবিতা এক সরলরৈখিক পথে চলতে শুরু করেছে। রবীন্দ্রনাথ ও জীবনানন্দের দেখানো বাংলা যে কবেই বিলুপ্ত হয়েছে তা এখনকার তরুন কবিরা ভুলতে বসেছে। তারা এখনো বৃষ্টি,প্রকৃতি,প্রিয়তমা এদের নিয়ে কবিতা লিখতে ব্যস্ত। আর ছাপাখানায় এইসব কবিতাই অহরহ ছাপা হচ্ছে। আমার মতো যারা আধুনিক কবিতায় বাস্তববাদী দৃষ্টিভঙ্গির প্রকাশ করতে চাইছে তাদেরও নানাভাবে বাঁধা দেয়া হচ্ছে। এ ব্যাপারে আপনার মতামত একান্ত কাম্য। আমি নিজেকে এখন একজন হাংরিয়ালিস্ট হিসেবে পরিচয় দিতে চাই যদিও আমাদের এপার বাংলায় আপনার হাংরি জেনারশন মতবাদ সম্পর্কে খুব কম মানুষই জানে। তাই এটাই সবচেয়ে ভালো সময় এখানে এ মতবাদ প্রতিষ্ঠা করার। ১৯৬৫ তে যে আন্দোলন স্তিমিত হয়ে গিয়েছিল সেটাকে কি আবার পুনর্জীবিত করে তোলা যায়না?আপনার ঠিকানা আমার কাছে নাই তাই এই চিঠি আপাতত আপনাকে দিতে পারছি না। তবে খুব শীঘ্রই আপনার ঠিকানা যোগাড় করে আমি আমার চিঠিখানা আপনার কাছে পৌছে দেবো। কারণ আপনার মতামত জানা আমার জন্য খুবই জরুরি।
ইতি,
হাংরিয়ালিস্ট
(কৌরব)
শুওরের বাচ্চার রুম চেক কর।প্রতিটা কোণা কোণা চেক কর।আফজালুর রহমান কপালের ঘাম মুছে পানের পিক ফেললেন ঘরের ভেতরেই।
“পাগল বানাইয়া ফেলসে আমারে।শালার জীবনে এতো ক্রিমিনাল দেখলাম কিন্তু এর মতন শুওরের বাচ্চা ক্রিমিনাল আর একটাও দেখিনাই”,কথাটা বেশ জোরেই বললেন তেজগাঁও থানার এসপি আফজালুর রহমান।
এক অদ্ভুত ধরনের সিরিয়াল কিলিং হচ্ছে বেশ কয়েক মাস ধরে এ ঢাকা শহরে।যাদের হত্যা করা হচ্ছে তারা সবাই কোনো না কোনো প্রকাশনা সংস্থার সাথে জড়িত।এছাড়া আর তেমন কোনো সূত্রও পাওয়া যায়নি।এমন অবস্থায় গত পরশু থানায় খবর আসে যে সদানন্দ প্রকাশনীর মালিক ও সম্পাদক সদানন্দ চাটুজ্যেকে কে নাকি শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে।লাশের পাশে একটা কবিতা লেখা কাগজ পাওয়া গেছে।কবিতার নাম “পোঁদের ওপর বিষফোঁড়া”।সেই কবিতার জের ধরেই আজ সমীরণ দাস নামক একজনের ঘরে তল্লাশি চালাতে এসেছে পুলিশ।কিন্তু এসে দেখে যে যাকে খোঁজা হচ্ছে সেই লোকই ঘরে নেই।
“স্যার ভেতরে তেমন কিছুই নেই,শুধু একটা ডাইরি পাওয়া গেছে।বাসা ছেঁড়ে মনে হয় চলে গেছে শালা।”,হাবিলদার রসূল খা এসে বললেন আফজালুর রহমানকে। আফজালুর রহমান মুখ শক্ত করে ডাইরিটা হাতে নিলেন এরপর এভিডেন্স ব্যাগে তা পুরে দিলেন।তারপর এই বাসায় নজর রাখতে বলে নীচে নেমে জীপে উঠলেন।
জীপে বসে ট্রান্সপারেন্ট এভিডেন্স ব্যাগটার দিকে তাকালেন তিনি।ডাইরিটা দেখতে বেশ পুরোনো মনে হচ্ছে।চামড়া ছিলে ঝুলে পড়েছে কয়েকজায়গায়,রং চটে গেছে অনেকখানি।ফিঙ্গারপ্রিন্ট টেস্ট করিয়ে কিছু না পাওয়া গেলে তো বিপদ হয়ে যাবে,একমনে ভাবছেন আফজালুর রহমান।ভেতরেই বা কি লেখা থাকতে পারে?এসব ভাবতে ভাবতেই তিনি হাতে গ্লোভস পড়ে ডাইরিটা বের করে ফেললেন ব্যাগ থেকে।হাতে নিয়ে ডাইরিটা খুলতেই একটা বোটকা গন্ধ নাকে এসে লাগলো তার।ডাইরিতে যে ক্যালেন্ডার দেয়া আছে তার দিকে তাকালেন তিনি।সাল লেখা ১৯৬৪-৬৫।আফজালুর রহমান অবাক হয়ে গেলেন এতো আগের ডাইরি এখনো অক্ষত অবস্থায় দেখে।প্রথম পৃষ্ঠা থেকেই খুব অগোছালো লেখা শুরু।আফজালুর রহমান পড়তে শুরু করলেন-
২রা নভেম্বর,১৯৬৪
আমি,দেবী আর সুবিমল তো বিশ্বাসই করতে পারছিলুম না যে মলয়কে নিয়ে আমেরিকার টাইম পত্রিকা পুরো একখানা দশাসই আকারের লিখা ছাপিয়ে দিয়েছে।আমি চা টা করে আনলুম সবার জন্যে এই সাত-সকালে আর এসেই দেখি দেবী রায় হাসি হাসি মুখ করে ঠায় দাঁড়িয়ে আছে।ওর হাসি দেখলে কি কেউ বুঝবে যে ক’দিন আগেও সে হাংরি মুকদ্দমা লড়ে এসেছে।আমি জিজ্ঞেস করলুম যে-কি রে বাপু?এতো হাসির কি হলো হঠাৎ?তখনই সে এই ঘটনাখানি বলল আমায়।আনন্দবাজার,যুগান্তরও ক’দিন আগে আমাদের এই আন্দোলন নিয়ে লিখা ছাপালো।আর এখন তা ঐ বিদেশ মল্লুকেও পৌঁছে গেল?যাক এখন ভাবতেই শান্তি লাগছে যে আমাদের এতদিনের কষ্ট কিছুটা হলেও তো সফল হলো। দেবী হাসি হাসি মুখ করে বলল-শক্তি এখন বুঝবে ঠ্যালা?ছেঁড়ে যে চলে গেলো আমাদের,এখন আবার খবরখানা পড়ে পড়িমরি করে দৌড় না দেয় হে! 
সুবিমল মাথা নাড়িয়ে বলল-আরে না…ও আর এসেছে!শক্তি চট্টোপাধ্যায় এখন বুঝতে শিখে গেছে যে কোথায় থাকলে লাভ আর কোথায় থাকলে ক্ষতি।ওর নতুন কবিতাখানা পড়েছিলুম কাল।হাসতে হাসতে বিষম খেলুম বুঝলে?কলিকাতায় যে এতো সৌন্দর্য বিরাজমান তা সে পাটনা বসে বসে লিখে ফেললো কি করে তাই বুঝতে পারলুম না। আমার ওদের এসব কথা ভালো লাগছিলো না তাই আমি উঠে এলুম সেখান থেকে।ভাবতে লাগলুম আমাদের এই হাংরি আন্দোলনের শেষ কোথায়?আমরা কোনো ভুল করছি না তো?”
আফজালুর রহমান এতটুকু পড়ে থামলেন।থানায় এসে পড়েছেন তাই বাকিটা এখন আর পড়া সম্ভব না।আজ রাতে বাসায় যেয়ে বাকিটা পড়তে হবে,ভাবলেন তিনি।তার কেমন যেন ঘোর লেগে যাচ্ছে পুরো ব্যাপারটায়।কিছু বুঝে উঠতে পারছেন না তিনি।কিছুই না…
(পোপের সমাধি)
আফজালুর রহমান হাতে বেশ কিছু বই নিয়ে বসে আছেন।আজ সারাদিন বিভিন্ন লাইব্রেরী খুঁজে,নানান মানুষের কাছে থেকে আনিয়ে বইগুলো সংগ্রহ করেছেন।আজ থানায়ও যান নি।সামনে রাখা নোটসগুলোর দিকে চোখ বুলালেন।হাংরি জেনারেশন বা হাংরি আন্দোলন নিয়ে যতো বইয়ের খোঁজ পেয়েছেন আনিয়ে নিয়েছেন তিনি।সেখান থেকে বেশ কিছু নোটস করেছেন যা পরে হয়তো কাজে লাগতে পারে।ঐ ডাইরিটা একটু পরে আসার কথা ফরেনসিক ল্যাব থেকে।ল্যাবে দেয়ার আগে আর পড়েনও নি তিনি।আফজালুর রহমান এটা খুব ভালভাবেই বুঝতে পেরেছেন যে ঐ ডাইরি,সিরিয়াল কিলিং আর হাংরি আন্দোলনের মধ্যে কোনো না কোনো যোগসূত্র অবশ্যই আছে।হাতে রাখা নোটসগুলো আবার পড়তে শুরু করলেন তিনি-
বাংলা সাহিত্যে স্হিতাবস্হা ভাঙার আওয়াজ তুলে, ইশতহার প্রকাশের মাধ্যমে, শিল্প ও সাহিত্যের যে একমাত্র আন্দোলন হয়েছে, তার নাম হাংরি আন্দোলন, যাকে অনেকে বলেন হাংরিয়ালিস্ট, ক্ষুধিত, ক্ষুৎকাতর, ক্ষুধার্ত আন্দোলন । আর্তি বা কাতরতা শব্দগুলো মতাদশর্টিকে সঠিক তুলে ধরতে পারবে না বলে, আন্দোলনকারীরা শেষাবধি হাংরি শব্দটি গ্রহণ করেন । হাংরি আন্দোলন, এই শব্দবন্ধটি বাংলাভাষায় ঠিক সেভাবে প্রবেশ করেছে যে ভাবে মুসলিম লিগ, কম্ম্যুনিস্ট পার্টি বা কংগ্রেস দল ইত্যাদি সংকরায়িত শব্দবন্ধগুলো । উত্তর-ঔপনিবেশিক ভারতবর্ষে ডিসকোর্সের সংকরায়ণকে স্বীকৃতি দেয়া তাঁদের কর্মকাণ্ডের অংশ ছিল । ১৯৬১ সালের নভেম্বরে পাটনা শহর থেকে একটি ইশতাহার প্রকাশের মাধ্যমে হাংরি আন্দোলনের সূত্রপাত করেছিল হারাধন ধাড়া ওরফে দেবী রায়কবিতা সম্পর্কিত ইশতাহারটি ছিল ইংরেজিতে, কেন না পাটনায়  বাংলা প্রেস পাননি । আন্দোলনের প্রভাবটি ব্যাপক ও গভীর হলেও, ১৯৬৫ সালে প্রকৃত অর্থে হাংরি আন্দোলন ফুরিয়ে যায় । নকশাল আন্দোলনের পর উত্তরবঙ্গ এবং ত্রিপুরাতরুণ কবিরা আন্দোলনটিকে আবার জীবনদান করার চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু তাত্ত্বিক ভিত্তিটি জানা না থাকায় তাঁরা আন্দোলনটিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেননি । 
হাংরি আন্দোলনকারীরা হাংরি শব্দটি আহরণ করেছিলেন ইংরেজি ভাষার কবি জিওফ্রে চসারের ইন দি সাওয়ার হাংরি টাইম  বাক্যটি থেকে , অর্থাৎ দেশভাগোত্তর বাঙালির কালখণ্ডটিকে তাঁরা হাংরিরূপে চিহ্ণিত করতে চাইলেন । তাত্তিক ভিত্তি সংগ্রহ করা হয়েছিল সমাজতাত্ত্বিক অসওয়াল্ড স্পেংলারের দি ডিক্লাইন অব দি ওয়েস্ট গ্রন্হটির দর্শন থেকে । স্পেংলার বলেছিলেন, একটি সংস্কৃতি কেবল সরলরেখা বরাবর যায় না; তা একযোগে বিভিন্ন দিকে প্রসারিত হয় । তা হল জৈবপ্রক্রিয়া, এবং সেকারণে সমাজটির নানা অংশের কার কোনদিকে বাঁকবদল ঘটবে তা আগাম বলা যায় না । যখন কেবল নিজের সৃজনক্ষমতার ওপর নির্ভর করে, তখন সংস্কৃতিটি বিকশিত ও সমৃদ্ধ হয় । তার সৃজনক্ষমতা ফুরিয়ে গেলে, তা বাইরে থেকে যা পায় ত-ই আত্মসাৎ করতে থাকে, খেতে থাকে, তার ক্ষুধা তখন তৃপ্তিহীন । হাংরি আন্দোলনকারীদের মনে হয়েছিল দেশভাগের ফলে ও পরে পশ্চিমবঙ্গ এই ভয়ংকর অবসানের মুখে পড়েছে, এবং উনিশ শতকের মণীষীদের পর্যায়ের বাঙালির আবির্ভাব আর সম্ভব নয় । সেকারণে হাংরি আন্দোলনকে তঁরা বললেন কাউন্টার কালচারাল আন্দোলন, এবং নিজেদের সাহিত্যকৃতিকে কাউন্টার ডিসকোর্স
আফজালুর রহমানের কবিতা বা সাহিত্য সম্পর্কে জ্ঞান একদমই শূন্য বলতে গেলে।তাই তিনি কিছুই বুঝতে পারছেন না এই আন্দোলনের উদ্দেশ্য।আর এই আন্দোলনের সাথে এখনকার এই সিরিয়াল কিলিং এর কি ই বা সম্পর্ক থাকতে পারে।ঐ ডাইরিটিই বা গেল কিভাবে ঐ ক্রিমিনালের বাসায়?ভেবেই পাচ্ছেন না আফজাল।তার মাথা বনবন করে ঘুরছে।বনবন করে…ভনভন করে।।
(মানুষের বাচ্চা.ক)
সমীরণ প্রায় আধঘণ্টা ধরে ল্যাট্রিনে বসে আছে।২ দিন ধরে পেট খারাপ তার।যেই মেসে উঠেছে সেখানকার বুয়ার রান্না এতটাই বাজে যে সমীরণের পেট একদমই ফেঁসে গেছে।কিছু খেলেই পেট নেমে যাচ্ছে তার আর তার ফলশ্রুতিতে পোকামাকড়ের ঘরবসতি এই ল্যাট্রিনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা তাকে কাঁটিয়ে দিতে হচ্ছে। সমীরণ তার হলদেটে চোখ দিয়ে পাশে গ্লাসে রাখা ইসপগুলের ভুষির দিকে তাকালো।২-৩ টা পিঁপড়া তাতে ডুবসাঁতার দিচ্ছে আর আরও কয়েকটা দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।সমীরণ বাংলাদেশের পুলিশদের অকর্মণ্যতার কথা শুনেছিল এতদিন কিন্তু এখন নিজেই সেটা অনুভব করছে।এদের প্রমাণ তুলে খাইয়ে দিলেও এরা অপরাধী ধরতে পারে না।সে ৭ টা খুন করলো পরপর,আগের বাসায় তার ফিঙ্গারপ্রিন্ট সহ ডাইরি রেখে এলো,শেষ খুনের ভিক্টিমের পাশে তার নিজের নামসহ কবিতা লিখে রেখে আসলো তাও পুলিশ তাকে ধরতে পারছে না।এতো বড় একটা হাই প্রোফাইল সিরিয়াল কিলিং কেস কিন্তু তাও তাকে কেউ ধরতেই আসছে না।
“শালার জেলে থাকলেও শান্তি পেতাম।অন্তত খাবারটা তো ঠিকমতো দিত”,বেশ কয়েকটা পাদ ছেঁড়ে ফোঁস ফোঁস করে বলল সমীরণ।
ইসপগুলের ভূষিটা কমোডে ফেলে লুঙ্গি কাচা দিয়ে উঠে পড়লো সে।যেকোনো সময় পুলিশ হয়তো এসে পড়তেও পারে।তাই মলয় রায়কে শেষ একটা চিঠি লিখে যেতেই হবে তার।ঠিকানাটা অবশেষে পেয়েছে সে অনেক কষ্টের পর।সবগুলো চিঠি একসাথেই পাঠিয়ে দেবে। সমীরণ চেয়ারের ওপর বুয়ার রেখে যাওয়া তেল চিটচিটে বালিশটা রেখে তার ওপর বসে পড়লো,যাতে পাছার ওপর চাপও কম পড়ে আর কিছু হয়ে গেলে যেন বুয়ার বালিশটাই নষ্ট হয়।
শ্রদ্ধেয় মলয় রায়চৌধুরী,
নমস্কার।আপনাকে এ পর্যন্ত আমি ২২ টি চিঠি লিখেছি।আর এটিই হবে আপনাকে লেখা আমার শেষ চিঠি।আগের চিঠিগুলোতেই আমি আপনাকে সবকিছু জানিয়ে দিয়েছি এবং আমার পরিস্থিতি বোঝানোরও চেষ্টা করেছি।কিভাবে আমি আপনার বড় দাদা সমীর রায়চৌধুরীর ফেলে দেয়া ডাইরিটি আমার বাবার কাছ থেকে পাই,কিভাবে আমি একজন হাংরিয়ালিস্ট হই,কিভাবে আমি হাই প্রোফাইল সিরিয়াল কিলিং এর মাধ্যমে হাংরি জেনারেশনকে মিডিয়াতে প্রচার করতে চাই তা আপনার সবটাই জানা।আপনারা যদি অহিংস আন্দোলন ছেঁড়ে সহিংস পথ বেছে নিতেন সেই ষাটের দশকে তাহলে আমাকে আমার জীবনটা এভাবে উৎসর্গ করতে হতো না।আমি অনেক ভেবে দেখেছি যতদিন পর্যন্ত আমি এ দেশের প্রতিটি তরুন কবিকে হাংরি আন্দোলনের মতবাদ সম্পর্কে জানাতে পারবো না ততদিন পর্যন্ত কবিতার ধারা বদলাবে না।প্রতিটি কবিকে নষ্ট হতে হবে,পথভ্রষ্ট হতে হবে তা নাহলে কবিতা লিখে লাভ নেই।কারণ পৃথিবীটাই তো এখন নষ্ট হয়ে গেছে।এখন আমি পুলিশের হাতে ধরা পড়লেই আমি মিডিয়াতে হাংরি জেনারেশনের কথা তুলে ধরবো।আর মিডিয়ার মাধ্যমেই সব কবি-সাহিত্যিকের কাছেও আমার কথা তুলে ধরতে পারবো।আমার মৃত্যুদণ্ড হয়ে যাবে নিশ্চিত তাই আপনাকে আমি দায়িত্ব দিয়ে গেলাম এপার বাংলার পরবর্তী সাংস্কৃতিক অচলাবস্থা সম্পর্কে তীব্র দৃষ্টি রাখার জন্য এবং হাংরি জেনারেশনকে এক নতুন মাত্রা দেয়ার জন্য।আশা করি আপনি আমার অনুরোধ রাখবেন। আমি আপনার বোম্বের ঠিকানাটা পেয়েছি অনেক খোঁজার পর।তাই সবগুলো চিঠি আপনাকে একসাথে পাঠিয়ে দিচ্ছি।আমি একজন হাংরিয়ালিস্ট হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করেছি মলয় রায়,এখন আপনার পালা।

ইতি
হাংরিয়ালিস্ট
(মানুষের বাচ্চা.খ)
মলয় রায় ব্যালকনিতে গা এলিয়ে বসে আছেন।পত্রিকা পড়া আপাতত শেষ তাই তিনি আঙুল দিয়ে আয়েশ করে নাক খুঁটছেন।তারপর ময়লা বের করে আশেপাশে তাকিয়ে টুপ করে মুখে পুরে দিচ্ছেন।ইদানিং ময়লার সাথে পাকা চুলও চলে আসে তাই তিনি প্রায়শই বিরক্ত হন।
“কত্তা একটা চিঠি এসেছে যে।”,হঠাৎ করেই কালিপদের কণ্ঠস্বরে কেঁপে উঠলেন মলয় রায়। “ঐ শালা বাঞ্চোত,শব্দ করে আসতে পারিস না।যা এখন এখান থেকে।”নাক-মুখ খিঁচিয়ে বলে উঠলেন তিনি।
“আজ্ঞে,চিঠি টা?”
“হ্যাঁ,দিয়ে যা।”
মলয় রায় চিঠি দেখে যারপরনাই বিরক্ত হলেন তার সাথে বিস্মিতও।যেই পাগলটার চিঠিগুলো তাকে ভয় পাইয়ে তটস্থ করে রেখেছিল এতদিন সেই পাগলটার তো ফাঁসি ই হয়ে গেলো কয়দিন আগে,টিভিতে দেখেছিলেনও তিনি সেই খবর।এখন আবার চিঠি পাঠালো কে?তিনি কাঁপা কাঁপা হাতে খুলতে লাগলেন চিঠির খাম…
শ্রদ্ধেয় মলয় রায়চৌধুরী,
নমস্কার।কেমন আছেন?আছেন?আশা করি ভালো।আমাকে আপনি চিনবেন না কারণ আপনার সাথে আমার পরিচয় নাই।দেখা হবার সম্ভাবনাও অত্যন্ত ক্ষীণ।আপনি জানলে হয়তো খুশী হবেন যে আমি আপনার হাংরি জেনারেশন মতবাদের একনিষ্ঠ ভক্ত।আমি ঢাকায় তথা বাংলাদেশে এ মতবাদ প্রতিষ্ঠা করতে ইচ্ছুক।কেননা আমাদের এপার বাংলায় কবিতা এক সরলরৈখিক পথে চলতে শুরু করেছে।রবীন্দ্রনাথ ও জীবনানন্দের দেখানো বাংলা যে কবেই বিলুপ্ত হয়েছে তা এখনকার তরুন কবিরা ভুলতে বসেছে।তারা এখনো বৃষ্টি,প্রকৃতি,প্রিয়তমা এদের নিয়ে কবিতা লিখতে ব্যস্ত।আর ছাপাখানায় এইসব কবিতাই অহরহ ছাপা হচ্ছে।আমার মতো যারা আধুনিক কবিতায় বাস্তববাদী দৃষ্টিভঙ্গির প্রকাশ করতে চাইছে তাদেরও নানাভাবে বাঁধা দেয়া হচ্ছে।এ ব্যাপারে আপনার মতামত একান্ত কাম্য।আমি নিজেকে এখন একজন হাংরিয়ালিস্ট হিসেবে পরিচয় দিতে চাই যদিও আমাদের এপার বাংলায় আপনার হাংরি জেনারশন মতবাদ সম্পর্কে খুব কম মানুষই জানে।তাই এটাই সবচেয়ে ভালো সময় এখানে এ মতবাদ প্রতিষ্ঠা করার।১৯৬৫ তে যে আন্দোলন স্তিমিত হয়ে গিয়েছিল সেটাকে কি আবার পুনর্জীবিত করে তোলা যায়না?আপনার ঠিকানা আমার কাছে নাই তাই এই চিঠি আপাতত আপনাকে দিতে পারছি না।তবে খুব শীঘ্রই আপনার ঠিকানা যোগাড় করে আমি আমার চিঠিখানা আপনার কাছে পৌছে দেবো।কারণ আপনার মতামত জানা আমার জন্য খুবই জরুরি।

ইতি,
হাংরিয়ালিস্ট
কালিপদ দূর থেকেই দেখলো তার কর্তা চিঠিখানা পড়েই অজ্ঞান হয়ে চেয়ার থেকে পড়ে গেছেন।কালিপদের উঠতে ইচ্ছে করছে না।পড়ে থাকুক বুড়ো আরও কিছুক্ষন।পরে যেয়ে সবাইকে বলা যাবে ক্ষণ…
(মানুষের বাচ্চা.গ)
হাতে লেগে থাকা রক্ত কোনমতেই ওঠানো যাচ্ছে না।এমনভাবে শুকিয়ে লেগে গেছে যে আফজালুর রহমান কসমস সাবান একটা ডলে শেষ করেও পুরোপুরি ওঠাতে পারছেন না।নখের আগায় তো এখনো লেগে আছে। সমীরণের ফাঁসি হয়েছে দুই মাস হলো,আফজালুর রহমানই সেই কেসের ইনচার্জ ছিলেন,প্রোমোশনও হয়েছে তার কয়দিন হয়।
“ধুস…সালা”,আফজাল হাল ছেঁড়ে কল বন্ধই করে দিলেন।খাতা-কলম নিয়ে বসে পড়লেন তিনি।সেই সকাল থেকেই একটা কবিতা মাথায় ঘুরছে তার কিন্তু এক মাগী প্রকাশককে খুন করতে গিয়েই সব ভজঘট হয়ে গেছে।“আমার কবিতা ছাপবেনা!সাহস কতবড়…কিন্তু এখন নতুন কবিতাই তো মাথায় প্যাচ খেয়ে গেছে।সমীরণ যে কিভাবে পারতো?”,নিজেকেই যেন জিজ্ঞেস করলেন আফজাল।বুঝতে পারলেন হাংরিয়ালিস্ট হতে এখনো আরও সাধনা করতে হবে তাকে…আরও অনেক সাধনা।
………………………………………সমাপ্ত……………………………………
[১৯৬৪ সালে মলয় রায়চৌধুরী তার “প্রচণ্ড বৈদ্যুতিক ছুতার” কবিতাটির জন্য অশ্লীলতার দায়ে অভিযুক্ত হয়ে গ্রেফতার হন।পরবর্তীতে তিনি মুক্তি পেলেও “হাংরি আন্দোলন” এর কার্যত সেখানেই সমাপ্তি ঘটে।তিনি বর্তমানে মুম্বাই এ বসবাস করেন তার পরিবারের সাথে।“হাংরিয়ালিস্ট” গল্পে তার ঘটনাটি পুরোটাই কাল্পনিক।]
-মেহেদী হাসান মুন
(রচনাকাল- ১৩ মে,২০১৩)




Tuesday, October 2, 2018

উদয়ন ভট্টাচার্যের ঈর্ষা

 হাংরি আন্দোলনের ব্যাপারটা আমার কাছে আজও এক আরোপিত প্রচেষ্টা মনে হয়। বিদেশের যে অ্যাংরি জেনারেশনের অনুকরণে হাংরির জন্ম, তার মূলে ছিল পশ্চিমি বৈভবের ফলে সব সহজে পেয়ে যাওয়ার এক মানসিক ক্লান্তি -- যার চূড়ান্ত প্রকাশ, 'মানি কান্ট বাই মি লাভ'-এ। সেই অ্যাঙ্গার ছড়িয়ে পড়েছিল সারা পশ্চিমি দুনিয়ায়। তারই ফলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে ক্যাম্পাস রেভোলিউশনের জন্ম হয়েছিল। নিউইয়র্ক শহরে শুরু হয়েছিল কবিতা আন্দোলন। বাংলায় যে হাংরি আন্দোলনের উৎস ঠিক কী ছিল তা আজও আমার কাছে পরিষ্কার নয়। এই গোষ্ঠীর কবিদের লেখা পড়ে আমার মনে হতো যৌন ক্ষুধাই যেন তাঁদের হাঙ্গারের উৎস। তাঁদের লেখায় দেখি অকারণ যৌনতার ছড়াছড়ি। তাছাড়া এই আন্দোলনের সবচেয়ে পরিচিত মুখ তো গর্ব করে বলতেই ভালোবাসেন যে তাঁকে অশ্লীলতার দায়ে কারাবন্দী করা হয়েছিল।

Wednesday, August 22, 2018

শৈলেশ্বর ঘোষের ডিগবাজি এবং দুই মুখো সাহিত্যজীবন

মোহিত চট্টোপাধ্যায় কিছু প্রশ্ন রেখেছিলেন। সেখান থেকে কয়েকটি উদ্ধৃতি :-

শৈলেশ্বর ঘোষ লিখেছেন – 


“একথা ঠিক সে মুখোসধারী ফুঁসে উঠবে, প্ররোচিত করলে রিঅ্যাকট্‌ করবে – জীবনে সত্য বিন্দুর দিকে যেতে থাকলে যে সচেতনতায় আঘাত পড়ে তা সকলে সহ্য করতে পারে না যে পৃথিবীতে সুখ অতি সহজ, একটি মুখোসের দাম যেখানে একটি কানাকড়ির বেশি নয়, ন্যায়পরায়ণ ভণ্ডামী যেখানে সত্য হিসেবে মূল্য পায়, সেখানে যে অস্তিত্ব মূলত একা আলাদা, স্বাধীন হয়ে যাওয়া যার আকাঙ্ক্ষা, নিজের জীবনই যার মুক্তির পথ, শরীরই যার কেবলমাত্র কম্যুনিকেট করে তাকে পৃথিবী বরদাস্ত করতে রাজী নয়, রাজি নয় সমাজ, রাষ্ট্র – তাই প্রতিটি মানুষ যখন একা আলাদা হয়ে যেতে থাকে তখনই পৃথিবীর সঙ্গে তাঁর যুদ্ধ শুরু হয় – তাকে ইতিহাস অপরাধী বলে ঘোষণা করে – ঘোরতর এই যুদ্ধের পারমাণবিক বিস্ফোরণই সাহিত্য এবং এখানে জীবন ও সাহিত্য এক – কোন তফাৎ থাকা মানেই কৃত্রিমতাকে মেনে নেওয়া – মানুষের ইতিহাসে অতঃপর এই যুদ্ধের ধারাবিবরণীই থেকে যাবে আর থাকবে প্রতিটির একক যোদ্ধার পরাজয় ও পতনের কাহিনী – ‘কল্যাণধর্ম’, ‘মূল্যবোধ’ শব্দগুলি কেবল বিচারকই উচ্চারণ করে যাবে – 


মোহিত চট্টোপাধ্যায় আমার ও আমার বন্ধুদের লেখা পড়েছেন এবং কিছু জানতে চেয়েছেন – উনি বিচারক নন, সাহিত্যিক ঈর্ষা, ব্যর্থতাদের থেকে উনি কিছু বলেননি – বললে তার কোন জবাব পেতেন না – যেমন কিছুদিন আগে, ‘দেশ’ পত্রিকায় প্রকাশিত ‘বাংরিজি সাহিত্যে ক্ষুধিত বংশ’ নামক ঈর্ষাকাতর ব্যক্তির নিজের ব্যর্থতাজনিত সাহিত্যিক কিচিরমিচির এর কোন উত্তর দেবার প্রয়োজন আমি বোধ করি না – মোহিত রানিং ডগস্‌ অব এস্টাব্লিশমেন্টের কেউ একজন নন – 


তিনি প্রশ্ন করেছেনঃ আমরা একধরণের কবিতা লিখছি, এটা শেষ পর্যন্ত বুর্জোয়া পদ্ধতিকেই স্বীকার করা। 


উত্তরে বললামঃ না, যা লিখছি আমরা কবিতা হিসেবে তা বুর্জোয়া মেনে নেয় না। ...” 

                                                    
    মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পাশে বসে আছেন বুর্জোয়া শৈলেশ্বর ঘোষ                          

Snehasish Roy-এর ঈর্ষা এবং তার গুরুদেবের তৃণমূলের দলদাসগিরি

মলয় রায়চৌধুরীর আত্মপ্রচারসর্বস্বতা,চালাকি,মিথ্যাচার ও ভন্ডামীর কারণে কিছুটা হলে হাংরি জেনারেশন তথা বাংলা কবিতার অন্যতম মেরুদন্ড শৈলেশ্বর ঘোষ তুলনামূলক অনেকটাই কম পঠিত ও পরিচিত৷যদিও এর কারণ কবির আত্মপ্রচারবিমুখতা,খ্যাতি,পুরস্কারকে সন্দেহ ও ঘৃণা করাও কিছুটা হতে পারে৷মহৎ কবির বৈশিষ্ট্য আর কী৷বাংলা কবিতার ভাষাবিমোচনকারী মৌলিক স্বরের এই কবি প্রতিষ্ঠান বা 'ক্ষমতার ভাষা'কে পরিহার করে নিজনির্মিত স্বতন্ত্র ভাষায় আজীবন কবিতা,গদ্য,নাটক রচনা করে গেছেন৷তাঁর রচনা প্রতি মুহূর্তে আমাদের বিবেকের সামনে দাঁড় করায়,আমাদের সামাজিক মুখোসগুলো খসে পড়ে তাঁর কবিতার মুখোমুখি হলে৷আজীবন যে কবিকে মার্জিনের দিকে ঠেলে দেওয়া হয় ক্রমশ,যখন তাঁর বেশকিছু পাঠক হয়,তাঁকে আর কিছুতেই অস্বীকার করা যায়না,তখন সেই প্রতিষ্ঠানই আবার তাঁকে নিয়ে ব্যবসা করে৷মুনাফালোভী নগ্নতার এই তো চরিত্র!আজ এই অস্থির সমাজে,বন্ধা সময়কালে শৈলেশ্বরের রচনা অনিবার্য হয়ে উঠেছে৷
তৃণমূলের দলদাস ও প্রতিষ্ঠানের বরপুত্র শৈলেশ্বর ঘোষ প্রদীপ জ্বালাচ্ছেন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের অনুষ্ঠানে ।

                                                             

Friday, August 10, 2018

কৌশিক : হাংরি আন্দোলনকে সুনীল গাঙ্গুলির ঈর্ষা

## হাংরি জেনারেশন নিয়ে আমার কিছু কথা ##
----- কৌশিক

" হাংরি জেনারেশন অফ লিটারেচার ইন বেঙ্গল " বিষয়টি নিয়ে একটু পড়াশোনা করতে গিয়ে বিখ্যাত কয়েক সাহিত্যিক ও কবিদের প্রতি আমার মনোভাব ১৮০ ডগ্রী ঘুরে গেলো।
তাদের মধ্যে অন্যতম হলেনঃ সুনীল গাঙ্গুলি এবং শক্তি চট্টোপাধ্যায়।
যদিও ওনাদের লেখার ভক্ত আমি এখনও।

মলয় রায় চৌধুরিকে ( হংরি জেনারেশন যার মস্তিস্ক প্রসূত) লেখা সুনীল গাঙ্গুলীর এক চিঠি(১০ জুন ১৯৬৪ তে লেখা) পড়ে জানতে পারলাম যে উনি রীতিমতো ধমক সুরেই বলেছিলেন যে ওনার খুব কাছের কয়েকজন সেই আন্দোলনে জরিত ছিলেন বলে তিনি
সেই আন্দোলন কে শুরুতেই গুঁড়িতে দেন নি। তবে তিনি সে ক্ষমতা তখনো রাখতেন। তিনি হাংরি আন্দোলন কে " সাম্প্রতিক উন্মাদনা" হিসাবেও আখ্যায়িত করেছেন "Hungryalist hullabaloo– the latest fad"
হাংরি আন্দোলন এর অনেক সদস্য কে "obscenity in literature" aar "conspiracy against govt" এই দুই ভিত্তিতে জেলে ঢোকানো হয়।
"প্রচণ্ড বৈদুতিক ছুতার" পড়ার সুযোগ হয়ে ওঠেনি এখনো আমার তবে আমি সুনীল গাঙ্গুলীর " দ্বারভাঙ্গার এক রমণী" পড়েছি, আর তাতে যা ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে তাকে যদি "obscenity"র তকমা না দেওয়া হয়ে থাকে তবে আমার
"obscenity" ওয়ার্ডটির ইন্টারপ্রিটেশান নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে।

শক্তি চট্টোপাধ্যায় ছিলেন মলয় রায়চৌধুরির দাদা সমীর রায়চৌধুরীর বন্ধু। তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ " হে প্রেম হে নৈঃশব্দ" টি সমীর রায়চৌধুরির চাইবাসার(বর্তমানে ঝারখন্ড রাজের এক শহর) বাড়িতে থাকাকালীন লেখা।
আর মলয় রায়চৌধুরির লেখা পড়ে জানতে পারি এই কাব্যগ্রন্থটি ওনার দাদার শ্যালিকার প্রেমে পড়ে লেখা। তবে প্রসঙ্গ টা হলো এই শক্তি চোট্টোপাধ্যায় ছিলেন এই আন্দোলনের অন্যতম সদস্য,
তিনি ও বিনয় মজুমদার নিজের খরচায় বুলেটিন ও ছাপাতেন। তবে সব বদলে যেতে থাকে যখন থেকে
এই আন্দোলনকে সরকার বিরোধী ঘোষনা করা হয়। পাঁচ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। সমীর রায়চৌধুরি শক্তি চট্টোপাধ্যায় এর এই আন্দোলন থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করা নিয়ে লিখেছেন --
" হাংরি আন্দোলনের প্রথম পর্যায়ে তার ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু ব্যক্তিগত নিরাপত্তাবোধের অভাব, প্রেমিকার অভিভাবক দ্বারা প্রত্যাখ্যান, চাকরির শর্ত, কলকাতার পুরোনো বন্ধুদের চাপ,প্রতিষ্ঠা ও খ্যাতির মোহ
ইত্যাদি ক্রমশ হাংরি আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী হয়ে থাকার প্রতি তার দৃষ্টিকোণ বদলে দিতে থাকে। অবাক হই হাংরি মামলায় শক্তির সরকারপক্ষে সাক্ষ্য দেবার সময়।
শক্তি আমাকে বা মলয়কে আগে থেকে জানায়নি যে ও সরকারী সাক্ষী হয়েছে। বিষয়টা নিয়ে শক্তির মধ্যেও ব্যক্তিগত সংকোচ ছিল। কিন্তু এই সংকোচের চেয়ে বড়ো ছিল আর সব কারণগুলো।"

বিখ্যাত লেখক সুনীল গাঙ্গুলীর অন্তরঙ্গ বন্ধু সন্দীপন চট্টোপাধ্যায় তিনিও স্ববিরোধী উক্তি করেছিলেন এই আন্দোলন কে নিয়ে।
১৯৭৪ সালে "while writing his own introduction in Adil Jussawala edited New Writing in India published by Penguin Books"
তিনি দাবি করেছেন যে তিনি এই আন্দোলন শুরু করবার এক অন্যতন সদস্য ছিলেন কিন্তু সে তিনিই ১৯৬৫ সালের ১৫ই মার্চ এই আন্দোলনের বিরুদ্ধে পুলিসে সাক্ষ্য দেনঃ
"Although I am not directly connected with the Hungry Generation but I was interested in the literary movement.
Some of the manifesto of the Hungry Generation contains advertisements of my literary works.
In one of the publications my name was cited as publisher.
This was probably done with a motive to exploit my reputation as writer but since my prior consent was not taken I took exception।
As a poet myself I do not approve either the theme or the language
of the poem of Malay Roychoudhury captioned "Prachanda Boidyutik Chhutar(Stark Electric Jesus)"
I have severed all connection with Hungry Generation"

বিখ্যাত কবি শঙ্খ ঘোষ পরে এই আন্দোলনের সমর্থন করলেও সেই টালমাটাল সময়ে এই আন্দোলনকে সমর্থন করেননি।
আমি মনে করি এই আন্দোলন কবিতা গঠনের আঙ্গিক ও আমাদের জিবনের দৈনন্দিন টানাপোড়েন ও শক্তিশালী ক্ষমতাশীল স্বৈরাচারিতার বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলে কবিতাকে বিদ্রোহের নতুন হাতিহার করে তোলে
যা সেই সময়ে খুবই অভিনব ও আশ্চর্যচকিত সাহসী পদক্ষেপ ছিলো যা এখনো আমার মতো যুবকদের অনুপ্রাণিত করে ও করে যাবে।

Wednesday, August 8, 2018

হাংরি আন্দোলন : গৌতম ঘোষদস্তিদার-এর ঈর্ষা

·
আজ (১৬ আগস্ট) আনন্দবাজার পত্রিকার ই-সংস্করণে আমাদের অনুজপ্রতিম বন্ধু বিশ্বজিত্ রায়ের (Biswajit Ray) ‘সাবঅলটার্নের দোহাই, গালাগাল দেবেন না’ নিবন্ধটি প্রণিধানযোগ্য। সাম্প্রতিক নব্য বাংলা-সিনেমায় ‘সাবঅলটার্নের দোহাই’ দিয়ে আকছার যে-ধরনের ছাপার অযোগ্য গালি ব্যবহার করা হয়, সে-সম্পর্কে বিশ্বভারতীর শিক্ষক বিশ্বজিত্ সবিনয়ে প্রতিবাদজ্ঞাপন করেছেন। 

বাংলাসাহিত্যে সেই ছয়ের দশকে হাংরি কবি-লেখকরা এমন-একটি ধারা প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন।তখন তা ছিল অনেকটাই অভিনব।সেই ধারা স্বভাবতই কোনও প্রভাব ফেলেনি পরবর্তী সাহিত্যে। পরে অরুণেশ ঘোষ, শৈলেশ্বর ঘোষ, ফালগুনী রায়, সুবিমল মিশ্র বা সুবিমল বসাকের লেখায় তা থেকেছে বিচ্ছিন্ন পালকের মতো। তা যে কেবল প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি না-পাওয়ায়, তা বোধহয় নয়। কেননা, আরও পরে সমরেশ বসুর ‘বিবর’, ‘প্রজাপতি’, ‘পাতক’, ‘স্বীকারোক্তি’ উপন্যাসগুলি প্রাতিষ্ঠানিক পত্রেই বেরিয়েছিল। মহাশ্বেতা দেবী চিরকাল সাবঅলটার্ন-জীবনের কথা লিখলেও, তাঁর লেখায় ওইজাতীয় অপশব্দ দুর্লক্ষ। 

নবারুণ ভট্টাচার্য্র লেখায় আমরা ওইসব শব্দের বিস্ফোরণ দেখেছি। নবারুণের মৃত্যুর পরে এই কথাটিই বলতে চেয়েছিলাম তাঁর হারবার্ট সরকারের মুখ দিয়ে, নবারুণ-হারবার্টের কাল্পনিক কথোপকথনে, সেই ভাষায়, এইভাবে যে, (সুমন মুখোপাধ্যায়ের ‘হারবার্ট’) ‘ছবিটাকে বিপজ্জনক মনে করেছিল রাষ্ট্র।’ নবারুণের এই বীক্ষণে হারবার্ট বলে, ‘সে তো ওই গেঁড়ে-মন্ত্রীটার জন্য! সেন্সরের-সার্টিফিকেট-পাওয়া বই, বলে কিনা নন্দনে দেকানো যাবে না! তা ভূত হয়েও ফিলিমিটা তো দেকলাম! বালের বিপজ্জনক! আমোদগেঁড়ে পাবলিক হেব্বি মস্তি নিয়েছে ছবিটা থেকে। শীতলাগা হলে একটা করে খিস্তি উড়েছে, আর পাবলিকের পয়সা উসুল হয়ে গেছে। আমাদের সময় হেলেনের পেটি দেখে অমন হত, এখন এসব খিস্তিখিল্লিছেটানো বিপ্লবের ফিলিম দেখলে সকলের দাঁড়িয়ে যায়! যখনকার যা, বুঝলে না, বাপ্পাদাদা!’ বিশ্বজিত্ এই কথাগুলি সবিনয়ে আরও তীব্র করে বলতে পেরেছেন।

মনে আছে, আমার লেখাটি পড়ে বন্ধুরা প্রশংসা করেছিল এই বলে যে, আমিও কতটা সাবঅলটার্ন পারি। তাতে লেখাটির অভিঘাতটুকু (যদি কিছু থাকত) মাঠে মারা যায়। বিশ্বজিতের লেখাটি তেমন হবে না। ধন্যবাদ, বিশ্বজিত্।

দেবপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায়-এর ঈর্ষা

"প্রচণ্ড বৈদ্যুতিক ছুতার" সম্পর্কে কিছু কথা: 
অধ্যাপক দেবপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায় যা কহিলেন
১। "সাহিত্য-ফাহিত্য লাথি মেরে চলে যাব"-- তবে কেন বাপু সাহিত্য আন্দোলন নিয়ে এত হাঁকুপাঁকু ?
২। "ধর্ষণকালে নারীকে ভুলে গিয়ে শিল্পে ফিরে এসেছি কতদিন"-- ধর্ষণ ইয়ে মানে বলপ্রয়োগ-সংগম ব্যাপারটা থেকে কবি-কথক শিল্পে ফিরেছেন-- বা, বেশ সমকালীন লাগছে... ভালো কথা, শুভার সম্মতি আছে তো?
৩। "শুভাকে হিঁচড়ে উঠিয়ে নিয়ে যাব আমার ক্ষুধায়"-- "ক্ষুধা" কি কেবল পেটের নিচের? পেটের খিদে যখন মোচড় দেয়, তখন, তখন.... খবরে প্রকাশ: চাষার আত্মহত্যা! হায়! হায় ক্ষুধিত পাষাণ!
৪। "এরকম অসহায় চেহারা ফুটিয়েও নারী বিশ্বাসঘাতিনী হয়/ আজ মনে হয় নারী ও শিল্পের মতো বিশ্বাসঘাতিনী কিছু নেই"-- এমত বাক্যের নারীবাদী পাঠ কেমন হবে?
৫। “একদিকে এই (ভাষার) বিস্ময়কর বহুত্ব..." বহুত্ব কিম্বা উদ্বৃত্ত মানের বিচ্ছুরণ তো পেলুম না, মনে হলো এত disposable text!এ আমারই দোষ, মোটা বুর্জোয়া মাথা তো আমার....


যাক, জানা গেল যে, এত্ত বড় বড় কবিরা সব গীতা ছুঁয়ে শপথ নিয়েছিলেন।
চট্টগ্রামের ভাষায় "প্রচণ্ড বৈদ্যুতিক ছুতার
অ-খোদা মরি যাইয়ুম যাইযুম/
আঁর চঁ’ড়া জ্বলি যারগই আঠাইট্যা ঠাডারে/
আঁই কী গউজ্জুম কডে যাইয়ুম/
অ’মারে কিচ্ছু গম ন লাগের/
লেয়-পড়া বেগ্গুন লাথি মারি/ যাইয়ুমগই শুভা/
শুভা আঁরে তোঁয়ার তরমুজ-কঅরর/ ভিতরে ঘইলতা দ’/
ঘুটঘুইট্টা আঁধারত খইর খইর/ মশারির লুডি পইজ্জা ছামাত/
বেক নাকল তুলি নিবার পর শেষ/ নাকলঅ আঁরে ফেলাই যারগই/
আঁইত আর ন পারির,/
মেলা কাঁচ ভাঙি যারগই আঁই জানি/ শুভা, হেডা মেলি ধর,/
শান্তি দ শিরা বেগ্গুনে চৌগরপানি/ আনি লই যারগই কইলজার ভিতরে/
আদিকাইল্যা ব্যারামে পুঁচি যারগই/ মগজর হাঁছোড়াইন্যা অউনর ফুঁয়া /
অ’মা, তুঁই আঁরে কঙ্কাল সিবে কিল্লাই জনম ন’দ?/
তইলে ত আঁই দুইকুটি অলোকবর্ষ/ ভগবাইন্যার পোঁদত চুম খাইতাম/
এয়াত কিচ্ছু ভালা ন লাগের আঁত্তে/ কিচ্ছুই ভালা ন লাগের/
উগ্যাত্তুন দু’য়া চুম দিলে উর্বিষ লা’য়/
জোরগড়ি চুইদত্তাম যাই কতবার / মাইয়াপোয়ার নাম প’ড়ি/
গম কামন ফিরি গেইগই/

                                       

হাংরি আন্দোলন : আনন্দবাজারের ঈর্ষা

আপেল মাহমুদ : আনন্দবাজার ও হাংরি আন্দোলন

আনন্দবাজার খুব বড় কোন পত্রিকা কি? আমরা কেন বারবার আনন্দবাজারের সংবাদকে খুব বেশি পাত্তা দিয়ে ফেলি? আনন্দবাজারতো হরহামেশাই আমাদের আজে বাজে অনলাইন পত্রিকাগুলোর মত নিউজ করে।

এইতো গত ২০ জুনের ঘটনা। হঠাৎ করে লক্ষ্য করলাম আনন্দবাজার নিউজ শিরোনাম করেছে 'নেইমারের শাস্তি কমে এক ম্যাচ'। সংবাদ পড়ে দেখলাম কলম্বিয়ার সাথে ব্রাজিলের ম্যাচে নেইমার জুনাগাকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে লালকার্ড খাবার শাস্তি কমে এক ম্যাচ করা হয়েছে। অথচ তখনো আমাদের চ্যানেলগুলো নেইমারের চার ম্যাচ নিষিদ্ধের খবর জানানো হচ্ছে। আমি শিওর হবার জন্য কয়েকজন ক্রীড়া রিপোর্টারকে ফোন দিলাম। সব শেষে শিওর হলাম আনন্দবাজারের নিউজটি সঠিক নয়। এমনকি সেই ভূয়া সংবাদটি তারা এখনো সরিয়ে নেয়নি বা সংশোধন করেনি।

গত ২২ জুন একটা সংবাদে আনন্দবাজার লিখল বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি নাকি দ্বিতীয় ওয়ানডে ম্যাচ জয়ের রাতে মুস্তাফিজুরকে নিয়ে গিয়েছিলেন ধোনীর রুমে। সেখানে মুস্তাফিজের আইপিএল দরজা খোলার সম্ভাবনা আছে কি না তা ধোনীর কাছে জানতে চান মাশরাফি। এমনকি ধোনির কাছে একটা ব্যাটও নাকি চেয়েছেন দেশের এক নবীন প্রতিভাকে উত্‌সাহিত করতে। ডাহা এই মিথ্যা কথাটা তারা কি করে লিখল? অদ্ভূত! এমনকি সংবাদ সম্মেলনে মাশরাফি মুস্তাফিজকে ধোনীর রুমে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি সত্য নয় বলে সাংবাদিকদের জানানোর পরেও আনন্দবাজার ভুল সংবাদটির জন্য ক্ষমা চায়নি এমনকি সংশোধনও করেনি। 

২২ জুনেরই আরেকটা সংবাদে আনন্দবাজার লিখলো বাংলাদেশীরা নাকি সুধীর গৌতমের উপর হামলা করেছে, পাথর নিক্ষেপ করেছে। অথচ সুধীর নিজেই জানিয়েছে তাকে কেউ পাথর নিক্ষেপ করেনি, আঘাতও করেনি। এমনকি তার সাথে যা হয়েছে সেটাকে মোটেও 'হামলা' শব্দ ব্যবহার উপযোগি কোন ঘটনা বলা যাবেনা। 

গত ৬ জুনের আরেকটা সংবাদ শৈলেন সরকার নামের একজন সাংবাদিক 'হাংরি জেনারেশন রচনা সমগ্র' বুক রিভিউ লিখতে গিয়ে স্বয়ং মলয় রায়চৌধুরীর অবদানকে খাটো করেছেন। আর সবচেয়ে মজার বিষয় হচ্ছে শৈলেন সরকার মলয়'দার 'প্রচণ্ড বৈদ্যুতিক ছুতার' কবিতাটিকে 'প্রচণ্ড বৈদ্যুতিক কুঠার' বলে লিখেছেন। বলাই বাহুল্য যে কবিতার জন্য মলয়'দার বিরুদ্ধে তৎকালীন পশ্চিমবঙ্গ সরকার মামলা করেছিল সেই কবিতার নামটা পর্যন্ত ঠিকভাবে জানেনা, তারা অাবার সাংবাদিক! আর সবচেয়ে আশ্চর্যজনক বিষয় এই যে মলয়'দা এই বিষয়টি নিজের ফেসবুকে খুব কঠোরভাবে লেখার পরেও আনন্দবাজার এখনো কোন ক্ষমা চায়নি এমনকি তাদের অনলাইন ভার্সনেও কবিতার নামটি সংশোধন করেনি

আমার কোলকাতার বন্ধুদের মুখেই শুনেছি ওরা আনন্দবাজারের সংবাদকে এতটাও গুরুত্ব দেয়না যতটা গুরুত্ব দেই আমরা বাংলাদেশীরা। তাই বলি কি, অনেক হইছে। আর না। এক জুন মাসেই যে পত্রিকাটি এত এত ভুল করে সেই পত্রিকার সারা বছরের নিউজ ঘাটলে ভুলের পাহাড় বের করা যাবে। তাই এই দায়িত্বজ্ঞানহীন নিম্নমানের পত্রিকাটির সংবাদ নিয়ে আর লাফালাফি না করি। পাগল পাগলের প্রলাপ বকতে থাকুক।

শুজা মাহমুদ : হাংরি জেনারেশন আন্দোলন আছে, থাকবে

Hungryalist movement // হাংরি জেনারেশন // হাংরি জেনারেশন আন্দোলন
একটি সতর্কবাণী : এই শিরোনামের পোস্ট গুলি বয়স নয় মনন ও চিন্তায় যারা প্রাপ্ত বয়স্ক শুধু মাত্র তাদের জন্য। 

রফিক ভাই, হাংরি জেনারেশন, ষাটের দশকের একটি মুছে যাওয়া আধ্যায়, তুলে এনেছেন সম্প্রতি তাঁর টাইম লাইনে । এই প্রসঙ্গে আমরা পরস্পরের সাথে আলাপ-চারিতায় আমাদের কৈশরে ফিরে গিয়েছি এবং স্মৃতি চারণ করেছি। মুরাদ জানতে চেয়েছে হাংরি জেনারেশনের কথা। বাংলায় ( উভয় বাংলায় ) কবিদের মধ্যে এখন আর শোনা যায় না, ষাটের দশকের প্রথমার্ধের সেই আন্দোলনের কথা। অথচ পশ্চিম বঙ্গে এবং বিশ্ব সাহিত্যের পরিমণ্ডলে এখনও আলোচিত হচ্ছে কোলকাতার Hungryalist Movement সম্পর্কে। ২০১৪-১৫ তে বিবিসি একটি ডকুমেণ্টারি প্রচার করেছিল। যুক্তরাষ্ট্রে এবং ভারতের সাহিত্য সম্পর্কিত পত্র পত্রিকায় এই সেদিনও লেখা লেখি হয়েছে ও হচ্ছে সেই দ্রোহ কালের কবি ও কবিতাবলি নিয়ে। সিনেমা হচ্ছে অথবা সিনেমার কাহিনীতে সংযোজিত হচ্ছে দ্রোহী কবিদের কবিতা ( সেন্সরড ) । 


হাংরি জেনারেশন নিয়ে পোস্ট একটি পর্বে শেষ হবে না। তাই প্রথম পর্বে কবিতা ও গান ( বাইশে শ্রাবণ ছবিটি ওই থিমে তৈরি ও কবিতার অংশ বিশেষ সে সময়ের ) দিলাম। পরের পর্বে বিভিন্ন ওয়েবসাইট হাতড়ানো-লব্ধ তথ্যাদি, আমার ক্ষুদ্র জানা ও ধারনা থেকে লেখার চেষ্টা থাকবে। মলয় চৌধুরীর ছবি ( সিনেমা )-টা আপলোডের চেষ্টা করবো সেই সাথে। এতদসম্পর্কিত জানা তথ্য ও চিন্তা ভাবনা বিনিময়ের জন্য সকলের কাছে বিনীত আহ্বান রইলো । বিনয়ের সাথে আরেকটি স্বীকারোক্তি, যে জলে ডুব সাঁতার দিয়ে মুক্তা খুজবেন, হয়তো দেখবেন আমিও সেখানে ডুব সাঁতার দিচ্ছি। আমি সে জন্য আগেই ক্ষমা চেয়ে নিলাম।

উত্তম দত্ত : হাংরি জেনারেশনের গুলি খাওয়া বাঘ মলয় রায়চৌধুরী

হাংরি জেনারেশনের গুলি খাওয়া বাঘ মলয় রায়চৌধুরীকে লেখা সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের একটি পত্র , যা গত শতাব্দীর ষাটের দশকের বাংলা সাহিত্যের একটি বিতর্কিত ঐতিহাসিক বাতাবরণের জীবন্ত দলিল । পত্রটির জন্য ঋণী রইলাম ডঃ উত্তম দাশের কাছে । পড়ুন ----- 

সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়-এর চিঠি ( মলয় রায়চৌধুরীকে লেখা )
আয়ওয়া
১০ জুন ১৯৬৪
মলয়,
তুমি কলকাতায় কী সব কাণ্ডের বড়াই করে চিঠি লিখেছ জানি না। কী কান্ড করছ ? আমার বন্ধুবান্ধবদের কেউ-কেউ ভাসাভাসা লিখেছে বটে কফিহাউসে কী সব গণ্ডোগোলের কথা।


কিছু লেখার বদলে আন্দোলন ও হাঙ্গামা করার দিকেই তোমার লক্ষ্য বেশি। রাত্রে তোমার ঘুম হয় তো ? এ-সব কিছু না --- আমার ওতে কোনো মাথাব্যথা নেই। যত খুশি আন্দোলন করে যেতে পারো --- বাংলা কবিতার ওতে কিছু আসে যায় না। মনে হয় খুব একটা শর্টকাট খ্যাতি পাবার লোভ তোমার। পেতেও পারো বলা যায় না। আমি এসব আন্দোলন কখনো করিনি, নিজের হৃৎস্পন্দন নিয়ে আমি এতই ব্যস্ত।


তবে, একথা ঠিক, কলকাতা শহরটা আমার। ফিরে গিয়ে আমি ওখানে রাজত্ব করব। তোমরা তার একচুলও বদলাতে পারবে না। আমার বন্ধুবান্ধবরা অনেকেই সম্রাট। তোমাকে ভয় করতুম, যদি তোমার মধ্যে এখন পর্যন্ত একটুও জেল্লা দেখতে পেতুম। আমার চেয়ে কম বয়সিদের মধ্যে একমাত্র তন্ময় দত্ত এসেছিল, আমার চেয়ে অন্তত ছ বছরের ছোটো--- কিন্তু জীবনানন্দের পর অত শক্তিশালী কবি এদেশে আর কেউ আসেনি। প্রচণ্ড অভিমান করে ও চলে গেছে। সেজন্যে এখনও আমি অপরের হয়ে অনুতাপ করি। আমি নিজে তো এখনও কিছুই লিখিনি, লেখার তোড়জোড় করছি মাত্র, কিন্তু তোমার মতো কবিতাকে কমার্শিয়াল করার কথা আমার কখনো মাথায় আসেনি। বালজাকের মতো আমি আমার ভোকাবুলারি আলাদা করে নিয়েছি কবিতা ও গদ্যে। তোমার প্রতি আমার যতই স্নেহ থাক মলয়, কিন্তু তোমার কবিতা সম্বন্ধে এখনো কোনোরকম উৎসাহ আমার মনে জাগেনি। প্রতীক্ষা করে আছি অবশ্য।


অনেকের ধারণা যে পরবর্তী তরুণ জেনারেশনের কবিদের হাতে না রাখলে সাহিত্যে খ্যাতি টেকে না। সে জন্যে আমার বন্ধুবান্ধবদের মধ্যে কেউ-কেউ একসময় তোমাদের মুরুব্বি হয়েছিল। আমি ওসব গ্রাহ্য করি না। নিজের পায়ে আমার যথেষ্ট জোর আছে, এমনকী একা দাঁড়াবার। আমার কথা হল : যে যে বন্ধু আছ, কাছে এসো, যে ভালো কবিতা লেখো কাছে এসো --- যে যে বন্ধু নও, বাজে কবিতা লেখো, দূর হয়ে যাও কাছ থেকে। বয়সের ব্যবধান তোলা আমার কাছে অত্যন্ত ভালগার লাগে।

চালিয়ে যাও ও সব আন্দোলন কিংবা জেনারেশনের ভণ্ডামি। আমার ওসব পড়তে কিংবা দেখতে মজাই লাগে। দূর থেকে। সাহিত্যের ওপর মৌরসি পাট্টা বসাতে এক-এক দলের অত লোভ কী করে আসে, কী জানি। তবে একটা কথা জানিয়ে রাখা ভালো। আমাকে দেখেছ নিশ্চয় শান্তশিষ্ট, ভালো মানুষ। আমি তাই-ই, যদিও গায়ে পদ্মাপারের রক্ত আছে। সুতরাং তোমাদের উচিত আমাকে দূরে-দূরে রাখা, বেশি খোঁচাখুঁচি না করা। নইলে, হঠাৎ উত্তেজিত হলে কী করব বলা যায় না। জীবনে ওরকম উত্তেজিত হয়েছি পৌনে একবার। গতবছর। দুএকজন বন্ধুবান্ধব ও-দলে আছে বলে নিতান্ত স্নেহবশতই তোমাদের হাংরি জেনারেশন গোড়ার দিকে ভেঙে দিইনি। এখনও সেক্ষমতা রাখি, জেনে রেখো। তবে এখনও ইচ্ছে নেই ও খেলাঘর ভাঙার।


আমার এক বন্ধু জানিয়েছে যে তোমরা নাকি আমার কোনো-কোনো চিঠির অংশবিশেষ ছাপিয়েছ। পত্রসাহিত্য-ফাহিত্য করার জন্য আমি চিঠি লিখি না। আমার চিঠি নেহাত কেজো কথা। অবশ্য লুকোবারও কিছু নেই। কিন্তু আগে-পরের কথা বাদ দিয়ে, ডটডট মেরে চালাকির জন্য আমার কোনো চিঠি কেউ ছাপিয়ে থাকে--- তবে আড়াই মাস পরে ফিরে তার কান ধরে দুই থাপ্পড় লাগাব বলে দিয়ো।


আশা করি শারীরিক ভালো আছ। আমার ভালোবাসা নিও।
সুনীলদা
Comments
Sudipta Pramanik
Sudipta Pramanik কি কান্ড!!
Manage
LikeShow More Reactions
· Reply · 2y
উত্তম দত্ত
উত্তম দত্ত কী কান্ড?
Manage
LikeShow More Reactions
· Reply · 2y
Suman Saha
Suman Saha অত্যন্ত দুর্লভ অজানা একটা ইতিহাস। স্যার আপনি অনুমতি দিলে আমি আমার পরিচিত দের মধ্যে বিষয় টি শেয়ার করতে চাই। অনুমতির অপেক্ষায় রইলাম। এমন একটা বিষয় সামনে আনার জন্য আপনাকে কৃতজ্ঞতা জানাই।
Manage
LikeShow More Reactions
· Reply · 2y
উত্তম দত্ত
উত্তম দত্ত শুভেচ্ছা
Manage
LikeShow More Reactions
· Reply · 2y
সর্ভানু দাশগুপ্ত
সর্ভানু দাশগুপ্ত ১৯৬৪ সালে হাংরি বুলেটিনে প্রকাশিত "প্রচণ্ড বৈদ্যুতিক ছুতার" কবিতাটির জন্য কবি মলয় রায়চৌধুরী অশ্লীলতার অভিযোগে গ্রেপ্তার হন | ১৯৬৭ সালে উচ্চ আদালতে অভিযোগমুক্ত হন | কবির পক্ষে সাক্ষীদের মধ্যে একজন ছিলেন সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় |সুনীলবাবু আদালতে বলেছিলেন এটি খুব ভালো কবিতা এবং কবিতাটির মধ্যে অশ্লীলতা নেই|
Manage
LikeShow More Reactions
· Reply · 2y
উত্তম দত্ত
উত্তম দত্ত শেষ কথাটি কিছু বিতর্কিত।
Manage
LikeShow More Reactions
· Reply · 2y
Asoke Chakravarty
Asoke Chakravarty @ Sarvanu , Uttam : adaalatay sunilda sotyo kathaa bolenni. Uni Moloy-er proyojanay oi ukti korechhilen. Aadalater baairay sampurno vinnomat poshan korten.
Manage
LikeShow More Reactions
· Reply · 2y
Arghya Dutta
Arghya Dutta 'কবিতাটির মধ্যে অশ্লীলতা নেই' এক কথা আর 'এটি খুব ভালো কবিতা' অন্য কথা। প্রথম কথাটি যে উনি বলেছিলেন তা মলয় রায়চৌধুরীর নিজের লেখাতেও পড়েছি। দ্বিতীয় কথাটি মনে হচ্ছে আগে কোথাও পড়ি নি। এ তথ্য তুমি কোথায় পেলে? আর কারো কারাদন্ড বাঁচানোই বোধহয় অভিযুক্ত-র সাক্ষী হয়ে কাঠগড়ায় ওঠার মুখ্য কারণ, সাহিত্যের সৎ বিচার তখন গৌণ। @সরভ।নু
Manage
LikeShow More Reactions
· Reply · 2y · Edited
Asoke Chakravarty
Asoke Chakravarty Ei lekhaati aagay pothito. Pryaato bandhu Uttam Daser songay Moloy-er sahityo bodh niay aalochanaa hoto. Sunildar songay bistor, Debi Roy er songay ebong Shraddheyo Shankhdar songay aalpo bistor aalochanaa hoy-aychhay. aami ei siddhaantay uponito jay MSee more
Manage
LikeShow More Reactions
· Reply · 2y
উত্তম দত্ত
উত্তম দত্ত সুন্দর ও সুচিন্তিত অভিমত।
Manage
LikeShow More Reactions
· Reply · 2y
Srimanta Ghosh
Srimanta Ghosh সেয়ার করলাম ......
Manage
LikeShow More Reactions
· Reply · 2y · Edited
Deblina Dhar
Deblina Dhar khub bhalo...
Manage
LikeShow More Reactions
· Reply · 2y
Tanusri Paul
Tanusri Paul share korchi.
Manage
LikeShow More Reactions
· Reply · 2y
Ratna Banerjee
Ratna Banerjee অনেক ধন্যবাদ এই পোস্টটির জন্য। শেয়ার করলাম।
Manage
LikeShow More Reactions
· Reply · 2y · Edited
উত্তম দত্ত
উত্তম দত্ত শুভেচ্ছা
Manage
LikeShow More Reactions
· Reply · 2y
Ranjan Roy
Ranjan Roy আমার একটি ভাবনার কথা সর্ভানু বলে দিয়েছে ...সুনীল বাবু সেদিন হাংরিদের হয়েই তাঁর মতামত দিয়েছিলেন ! এবং এটাও জানি শক্তি সুনীল বাবুরাও এক সময় হাংরির শরিক হয়েছিলেন ! পরে শাসকের ভয়ে ,পাঠকের গ্রহণ যোগ্যতার ভয়ে পিছিয়ে এসেছিলেন ! উৎপল কুমার বসু তো পুলিশের কাছে See more
Manage
LikeShow More Reactions
· Reply · 2y
শাশ্বতী সান্যাল
শাশ্বতী সান্যাল কিন্তু যেভাবে তন্ময় দত্ত প্রসঙ্গ এল, তাতে কী মনে হয়! অহংকারের দাঁত নখ? অবশ্য তোমার শেষ কথাগুলোর সাথে আমি সম্পূর্ণ সহমত। সত্যিই কবি-সাহিত্যিকদের কোনটা মুখ আর কোনটা মুখোশ, এ দ্বন্দ্বে আমি চিরটাকাল ভুগে এলাম
Manage
LikeShow More Reactions
· Reply · 2y
Ranjan Roy
Ranjan Roy ভাগ্যিস তন্ময় দত্ত ছেড়ে চলে গেছেন ! নইলে সুনীল বাবুর পরীক্ষাটা বোঝা যেত ..আমার পড়াশোনা খুব কম ..তবে যেটুকু জানি রবীন্দ্রনাথের পরে বুদ্ধদেব বসুই একমাত্র ব্যক্তি যিনি নিজে হাতে জীবনানন্দের কাব্য ছেপে কবিকে আলোয় এনেছিলেন ! এরপর এমন পূর্বসূরি আছেন কিনা আমার জানা নেই ! ...
Manage
LikeShow More Reactions
· Reply · 2y
Arghya Dutta
Arghya Dutta আমি শাশ্বতীর পাশে থাকলাম এই প্রসঙ্গে। তবে এসব বিষয়ে সামনা সামনি বসে আলোচনা না করলে বিস্তর ভুলবোঝাবুঝির সম্ভাবনা থাকে। আর আমরা মানুষের পিছিয়ে আসা দেখি, কিন্তু তার কারণটা নিজেরা অনুমান করে নিই বাঁধা ছকে। শুরুতে কোনো কিছুর শরিক হয়েও পিছিয়ে আসার কারন ঐ ভয় See more
Manage
LikeShow More Reactions
· Reply · 2y · Edited
Ranjan Roy
Ranjan Roy যাঁরা একদিন নিজেরাই হাংরি আন্দোলনে ছিলেন তাঁরাই পরে যদি হাংরিদের গালিগালাজ করেন ..আর সেটাকে যদি মান্যতা দিতে হয় তাহলে সুবোধ সরকার আর জয় গোস্বামীরা রং বদল করে ভালই করেছেন অর্ঘ্য দা !.. যে যখন ক্ষমতায় আসবেন নানা কারণ দেখিয়ে তাঁদের সঙ্গে ভিড়ে যাওয়াতে অন্যায় কিছু থাকে না আর !.. আর নীতি আদর্শের কথা না হয় শুধু পাঠকদের জন্যই বরাদ্দ রইলো ....এবং নিজের অবস্থান বদলাতে না পেরে শঙ্খ বাবুর মত কতিপয় মানুষ খুব বোকামিই করেছেন !
Manage
LikeShow More Reactions
· Reply · 2y
Arghya Dutta
Arghya Dutta ব্যাক্তি স্বার্থে সুচতুর রাজনৈতিক শিবির পরিবর্তন এবং অন্যের শুরু করা সাহিত্য আন্দোলন থেকে কিছুদিন বাদে ভুল বুঝতে পেরে সরে আসা একই গোত্রিয় কিনা আমার সন্দেহ আছে। বরং শাসকের ভয়ের তোয়াক্কা না করেই তো দেখছি উনি অভিযুক্তর পক্ষে সাক্ষী হয়েছেন!
Manage
LikeShow More Reactions
· Reply · 2y
Pallab Ganguly
Pallab Ganguly এই চিঠিটা দিয়ে সুনীল গাঙ্গুলীর চরিত্রের মূল্যায়ন অন্যায় হবে যদি “যদি ডট ডট দিয়ে চালাকি মেরে” লেখা চিঠিটা পাশাপাশি না রাখা হয়। প্ররোচনার মাত্রা বা প্রেক্ষাপটটা জানাটা খুব জরুরী। না হলে বোঝা মুশকিল চিঠিতে প্রকাশিত আবেগে কোনটা বেশী পরিমাণে ছিল— প্রতিভSee more
Manage
LikeShow More Reactions
· Reply · 2y
Ranjan Roy
Ranjan Roy আমার পড়াশোনা তেমন বেশি নয় ! তবু যেটুকু পড়েছি এটা বুঝেছি যে হাংরিদের নিয়ে শক্তি সুনীলের অবস্থান ছিল আপেক্ষিক ! হাংরিতে যোগ দেওয়া কিম্বা হাংরি ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়া অথবা হাংরিদের গালিগালাজ করা পর্যন্ত .....জানি না কোন অবস্থানটা ঠিক !(পল্লব বাবু )
Manage
LikeShow More Reactions
· Reply · 2y
Kobi Kaushik Ganguly
Kobi Kaushik Ganguly যতদূর জানি সুনীল এই আন্দোলনের সঙ্গে বিন্দুমাত্র যুক্ত ছিলেন না । চিঠিটা যাই হোক মলয় যথেষ্ট শক্তিশালী লেখক তা তিনি সুনীলের মতন জনপ্রিয় না হলেও ।
Manage
LikeShow More Reactions
· Reply · 2y · Edited
Samarjit Sinha
Samarjit Sinha চিঠিটা আগে পড়েছি...
Manage
LikeShow More Reactions
· Reply · 2y
Sarit Dutta
Sarit Dutta উত্তমবাবু এই চিঠিটা কি আপনার ব্যক্তিগত সংগ্রহে আছে? নতুবা উৎসটা একটু জানালে ভালো হয়।
মানে আর কিছু না আমি একটা লেখার জন্যই হাংরিদের নিয়ে সামান্য পড়াশুনো করেছিলুম। তো ---- জিজ্ঞাসা পত্রিকার পঞ্চম বর্ষের কার্তিক পৌষ সংখ্যায় মলয় রায়চৌধুরীর নিজের লেখায় এইরক
See more
Manage
LikeShow More Reactions
· Reply · 2y
উত্তম দত্ত
উত্তম দত্ত চিঠিটি উত্তমবাবু পরে তাঁর হাংরিদের নিয়ে লেখা বইতে ছেপেছিলেন বলে জানি। আর আমার কাছে আরেকটি চিঠি আছে সুনীলদার, সেটা সমীর রায় চৌধুরীকে লেখা। তাতে সুনীলদা বলেছেন, আদালতে তিনি ধর্মগ্রন্থ ছুঁয়ে মিথ্যা বলেছেন, শুধু সাহিত্যের উপরে পুলিশের হস্তক্ষেপ সমর্থন করেন না বলে।
Manage
LikeShow More Reactions
· Reply · 2y
Sarit Dutta
Sarit Dutta ধন্যবাদ দাদা। আসলে আমার খটকাটা লাগছিলো অন্য জায়গায়। আমাদের প্রজন্ম মলয় রায়চৌধুরীকে যেভাবে জানি তাতে এইরকম একটা মারাত্মক পত্রাঘাতের পরও সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় সম্পর্কে ওনার সশ্রদ্ধ অবস্থান মানতে পারা কঠিন।
Manage
LikeShow More Reactions
· Reply · 2y
Asoke Chakravarty
Asoke Chakravarty Uttam Datta : Thik oi kathaa Sunilda bolechhilen .. "Aami to naastik, dhrmagrantho chhun-ay ki bollam tatay ki-i baa esay gelo."
Manage
LikeShow More Reactions
· Reply · 2y
Ranjan Roy
Ranjan Roy হাংরি আন্দোলন সম্পর্কে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের অবস্থান বদলে বদলে গেছে ...
1. মলয় রায় চৌধুরীর প্রথম কাব্য " শয়তানের মুখ "(1964)এর প্রকাশক ছিলেন সুনীল ! যদিও সেখানে এই আন্দোলন নিয়ে তাঁর সুস্পষ্ট কোনো বক্তব্য ছিল না !
2. লিটিল ম্যাগাজিন গবেষক কমল গঙ্গোপাধ্যা
See more
Manage
LikeShow More Reactions
· Reply · 2y
Sarit Dutta
Sarit Dutta আমি ঠিক এই দ্বান্দিকতার কথাটাই বলতে চাইছি
Manage
LikeShow More Reactions
· Reply · 2y
Anita Majumder
Anita Majumder আমি শেয়ার করবোই এমন অজানা তথ্য.. প্লিজ।
Manage
LikeShow More Reactions
· Reply · 2y
Manas Chakraborty
Manas Chakraborty কি লাভ এ সবে ! হাংরি , আধুনিক , পুনরাধুনিক ,প্রাচীন পন্থী ... আমার কাছে সাহিত্য কতটা আয়না হয়ে উঠলো সেটাই বিবেচ্য .. খুব কম কবিতা লিখেও সলিল চৌধুরী কেবল "শপথ" কবিতার স্রষ্টা বলে স্মরণীয় , দুর্ভিক্ষের দ্বারে বসে যদি কবি গোলাপের অনুবাদ শোনান তখন তাঁকে আর নিতে পারি না ... মানুষ খেতে পাচ্ছে না এর থেকে অশ্লীল কিছু হয় !
যে যেমন খুশি পরীক্ষা করুন পাঠক বুঝে নেবেই আসল সাহিত্য কে
Manage
LikeShow More Reactions
· Reply · 2y